টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পানির চাপে সাতক্ষীরার কলারোয়া বাজার এলাকার বেত্রাবতী নদীতে নির্মিত বিকল্প সেতুটি ভেঙে পড়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ফলে কলারোয়া সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ছয়টি ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক মানুষের। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তাঁরা।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় কলারোয়া বাজার এলাকায় বেত্রাবতী নদীর ওপরের সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ৪৮ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থের সেতুটি নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয় ৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। কাজটি পায় মোজাহার এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ১৪ এপ্রিল সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর। সময় শেষ হওয়ার পরও কাজ শেষ হয়নি।
কলারোয়া পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক কামাল রেজা জানান, কলারোয়া সদরের সঙ্গে জালালাবাদ, জয়নগর, দেয়াড়া, যুগীখালী, কয়লা ও পৌরসভার দুটি ওয়ার্ডের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম ছিল বেত্রাবতী নদীর বাজার এলাকার সেতুটি। নতুন সেতুর কাজ করার জন্য পুরোনো সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়। মানুষ চলাচলের জন্য আগের সেতুর দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হয় বিকল্প সেতু। বিকল্প সেতুর পাটাতন ছিল লোহার; কিন্তু সম্প্রতি অতি বৃষ্টিতে নদীতে পানি বেড়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে বিকল্প সেতুটি ভেঙে পড়ে।
জালালবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, সেতু ভেঙে পড়ায় এখন আর তাঁরা উপজেলা সদরে যেতে পারছেন না। অথচ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা পরিষদ, থানা, স্কুল-কলেজ, কলারোয়া পৌরসভাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান নদীর এ পাড়ে।
রফিকুল আরও বলেন, চার বছর আগে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হলেও এখনো শেষ হয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দিয়েও লাভ হয়নি। এবার তো বিকল্প সেতুও ভেঙে পড়েছে। এখন নৌকা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজের মালিক মোজাহার আলীর সঙ্গে এ বিষয়ে যোগযোগ করা যায়নি। তবে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছয় দিন নতুন সেতুর কাজ বন্ধ থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে আবার কাজ শুরু করা হয়েছে। নির্মাণশ্রমিক লিয়াকত আলী বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে কাজ বন্ধ ছিল। সাতক্ষীরা থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী এসে কাজ করার জন্য বললে তাঁরা কাজ শুরু করেছেন।
সাতক্ষীরা সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার পারভেজ জানান, তিনি দুপুরে কলারোয়ার বাজার এলাকায় ভেঙে পড়া সেতুটি দেখতে যান। সেখানে নতুন করে বেইলি সেতু করতে হবে। আশা করছেন আগামীকাল শুক্রবার থেকে কাজ শুরু হবে।