কক্সবাজারের রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের পানেরছড়া এলাকায় ‘বৈদ্যুতিক ফাঁদে’ আটকে একটি বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। দুপুরে বন বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাতিটি উদ্ধার করেন।
হাতি হত্যার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে জানিয়ে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকালের দিকে পানেরছড়া এলাকার পানবরজের পাশে আট বছর বয়সী হাতিটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে হাতিটি মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে হাতি থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে এলে বলা যাবে মৃত্যুর কারণ।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামের লোকজন জানান, ধানখেত রক্ষার জন্য পানির ছড়ায় কয়েকজন বিদ্যুতের তার টেনে রেখেছিলেন। আজ সকাল সাতটার দিকে বনাঞ্চল থেকে চারটি হাতি নেমে ধানখেতের দিকে যেতে থাকে। এর মধ্যে কম বয়সী একটি হাতি বিদ্যুতের তারের ফাঁদে আটকা পড়ে। এ সময় অপর তিনটি হাতি কিছুক্ষণ ঘটনাস্থলে দৌড়ঝাঁপ দিয়ে বনে ফিরে যায়। ততক্ষণে আটকে পড়া হাতিটির মৃত্যু হয়। দুপুর ১২টার দিকে বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাতিটি উদ্ধার করেন।
এ ব্যাপারে ডিএফও মো. সরোয়ার আলম বলেন, স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, বৈদ্যুতিক ফাঁদে আটকে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত অনুসন্ধান ও মরা হাতির অবস্থা দেখে তার কিছু পাওয়া যায়নি। হাতির শরীরে আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে পেট ফোলা ছিল। বিষাক্ত কিছু খেয়ে অথবা খাইয়ে হাতিটি হত্যা করা হয়েছে কি না, তা–ও জানা যাবে পরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে এলে।
পরিবেশবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, ধানখেত রক্ষার জন্য রামুর পানেরছড়া হোয়ারিয়াঘোনা এলাকায় বেশ কয়েকজন বিদ্যুতের তার টেনে রাখেন। ওই তারে জড়িয়ে ৮-১০ বছর বয়সী এশিয়ান জাতের ওই হাতির মৃত্যু হয়েছে। এটি এক ধরনের হত্যাকাণ্ড। এর আগেও রামুতে বৈদ্যুতিক ফাঁদে আটকা পড়ে কয়েকটি বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছিল। হাতি হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।