খুলনা থেকে নড়াইল হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’ট্রেন সাড়ে চার ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছেছে। খুলনা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও ৪ মিনিট দেরিতে যাত্রা শুরু করে; আর ঢাকায় গিয়ে পৌঁছায় ১০টা ৩৫ মিনিটে। রেলওয়ের সময়সূচি অনুয়ায়ী, ট্রেনটির দেরি হয়েছে ৪৫ মিনিট।
নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুযায়ী, ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে। তবে শিবচরে ক্রসিংয়ের কারণে ২৫ মিনিট দেরি হয় ট্রেনটির। ট্রেনে থাকা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
কিছুটা দেরি হলেও ট্রেনে এত কম সময়ের মধ্যে খুলনা থেকে ঢাকায় যেতে পারায় খুশি যাত্রীরা। ট্রেনের অন্য সেবাও বেশ ভালো বলে জানিয়েছেন তাঁরা। যাত্রীরা আশা করছেন, সামনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ট্রেনটি ঢাকা ও খুলনায় পৌঁছাবে। প্রথম দিন হওয়ায় বিভিন্ন কারণে হয়তো দেরি হয়েছে।
খুলনা থেকে নড়াইল হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় নতুন রেল রুট চালু হয়েছে। এর আগে ট্রেনে করে খুলনা থেকে ঢাকায় যেতে সময় লাগত কমপক্ষে সাত ঘণ্টা। আজ প্রথম দিন খুলনা থেকে ৫৫৩ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছিল জাহানাবাদ এক্সপ্রেস। খুলনা থেকে প্রথমবার এই ট্রেনের যাত্রা শুরু হলেও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে। সেখানে আজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
খুলনা থেকে ঢাকায় যাওয়া ট্রেনের যাত্রী ছিলেন এনামুল হক। মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ট্রেনটি খুলনা থেকে ৪ মিনিট দেরিতে ছেড়েছিল। আর ঢাকায় পৌঁছেছে ১০টা ৩৫ মিনিটে। সব মিলিয়ে প্রথম যাত্রায় ৪৫ মিনিটের মতো দেরি করেছে ট্রেনটি। তবে ট্রেন জার্নিটা ছিল বেশ আরামদায়ক। সার্ভিসও ছিল বেশ সুন্দর। সব মিলিয়ে এত কম সময়ের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছানো যাবে, তা আমাদের কাছে ছিল কল্পনাতীত। আজ সেই ঐতিহাসিক যাত্রায় সঙ্গী হতে পেরে আমি খুব খুশি।’
এনামুল হক আরও বলেন, আটটি স্টেশনে ট্রেনটি গড়ে তিন মিনিট করে দেরি করেছে। এ ছাড়া শিবচরে ক্রসিংয়ের কারণে দেরি হয়েছে আরও ২৫ মিনিটের মতো। এসব কারণেই হয়তো ট্রেনটি নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছাতে পারেনি। প্রথম দিন ট্রেনে কোনো খাবারের ব্যবস্থা ছিল না। এ কারণে ভোরে যাত্রা শুরু করা যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
সুন্দরবন এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া হয়ে খুলনায় যাচ্ছে। এই ট্রেনে খুলনা-ঢাকা চলাচলে সময় লাগে প্রায় সাত ঘণ্টা।
ওই ট্রেনের আরেক যাত্রী ছিলেন খুলনার দৌলতপুর এলাকার মারুফ হোসেন। তিনি একজন ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, ‘এই ট্রেন খুলনাবাসীর জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। এত কম সময়ে খুলনা থেকে ঢাকায় যাওয়া যাবে, তা আমরা কখনো ভাবতেও পারিনি।’
নতুন রুটের ট্রেনের নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী, খুলনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত শোভন চেয়ার ৪৪৫ টাকা, স্নিগ্ধা (এসি চেয়ার) ৮৫১ টাকা ও এসি সিট ১০১৮ টাকা।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে ঢাকা থেকে খুলনার পথে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি চলাচল করে। এর মধ্যে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া হয়ে খুলনায় যাচ্ছে। এই ট্রেনে খুলনা-ঢাকা চলাচলে সময় লাগে প্রায় সাত ঘণ্টা। অন্যদিকে চিত্রা এক্সপ্রেস বঙ্গবন্ধু সেতু হয়েই চলাচল করছে। এই ট্রেনের সময় লাগে সাড়ে ৯ ঘণ্টার মতো। এর বাইরে বেনাপোল এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া হয়ে যশোরের বেনাপোলে যায়। এতে সময় লাগছে সাড়ে সাত ঘণ্টা।