আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে উপনির্বাচনে অংশ না নেওয়ার পরামর্শ দিলেন বিএনপির নেতারা

আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া
আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া

প্রবীণ রাজনীতিবিদ আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ ছাড়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দলটির নেতাদের কেউ কেউ মনে করছেন, নিজের পদত্যাগ করা আসন থেকে (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২) উপনির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি। তাঁদের ভাষ্য, দল থেকে পদত্যাগের পর তিনি স্বতন্ত্র বা অন্য কোনো দলের মনোনয়ন নিয়ে উপনির্বাচনে প্রার্থী হলে ভুল করবেন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তিনি দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ছিলেন।

এর আগে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন প্রবীণ এই নেতা। নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এই শূন্য আসনে উপনির্বাচন হবে।

আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার দলীয় পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিছুল ইসলাম ঠাকুর প্রথম আলোকে বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে চার বছর ধরে তাঁকে (আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া) দলীয় কোনো কর্মসূচিতে পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েক মাস আগে সরাইলে দলীয় একটি কর্মসূচিতে রুমিন ফারহানা এসেছিলেন। সেই কর্মসূচিতে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে প্রধান অতিথি করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আসেননি।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর বলেন, দলীয় কোনো কর্মসূচিতে অনেক দিন ধরেই আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার উপস্থিতি ছিল না। এখন দল থেকে পদত্যাগ করে যদি স্বতন্ত্র বা অন্য দলের মনোনীত প্রার্থী হন, তাহলে ভুল করবেন তিনি। তাঁকে জনগণ ভোট দেবে না। এটি ধানের শীষের ঘাঁটি, কোনো ব্যক্তির নয়।

পদত্যাগের বিষয়ে কিছু জানেন না দাবি করে জেলা বিএনপি আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে তিনি বা তাঁর পরিবারের কেউ আমাদের সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ করেননি।’

এর আগে দলীয় পদ ছাড়ার কারণ জানতে কথা বলতে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার মুঠোফোনে কল করা হলে ধরেন তাঁর ছেলে মাঈনুল হাসান ভূঁইয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বাবা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে আছেন। তাঁর বয়স হয়েছে। তা ছাড়া আমার বাবা টানা ২৭ বছর জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তিনি দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। দলের সিদ্ধান্তে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু গত নির্বাচনের পর থেকে কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির কোনো ব্যাপারেই তাঁকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করা হয় না।’

এ বিষয়ে জেলা বিএনপি আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া থাকেন ঢাকায়। তাঁর বাসা চিনি না। মুঠোফোনে কল করলে ধরেন না। তাহলে তাঁর সঙ্গে পরামর্শ করব কেমন করে? তিনি স্বতন্ত্র বা অন্য যেকোনো দলের হয়ে যদি উপনির্বাচনে অংশ নেন, তবে দলের কেউ তাঁর পক্ষে কাজ করবে না।’
নিজ উপজেলা কমিটি গঠনের ব্যাপারেও তাঁর বাবার পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে না উল্লেখ করে মাঈনুল হাসান ভূঁইয়া আরও বলেন, ‘দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে কল করলেও ধরেন না। তাই সম্মান থাকতে আমার বাবা দল থেকে পদত্যাগ করেছেন।’

তাঁর বাবা আসন্ন উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন কি না, জানতে চাইলে মাঈনুল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি।’