বিএনপি-জামায়াতের হাতে নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। আজ শনিবার বিকেলে সিলেট নগরের ধোপাদীঘির পাড়ে একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত বলছে অন্তর্বর্তীকালীন, তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার না হলে তারা নির্বাচন করবে না। নির্বাচন করতে হলে এই সরকার পদত্যাগ করে একটি সরকার গঠন করলে কেবল তারা নির্বাচনে অংশ নেবে। আমরা বলছি, নির্বাচন যদি কারও হাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে থাকে, এমনকি তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি কারও হাতে ধ্বংস হয়ে থাকে, সেটা হয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের হাতে।’
রাশেদ খান মেনন বলেন, বিএনপি-জামায়াতের হাতে নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ধ্বংস হওয়ার প্রমাণ ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার শাসনামল। সেই সময় মাগুরা ও মিরপুরের উপনির্বাচনের পর শেষ পর্যন্ত যখন নিরপেক্ষ নির্বাচনের আন্দোলন শুরু হলো, তখন ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনে ১৫ দিনের জন্য খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছিল। খালেদা জিয়ার নির্দেশে আজিজ কমিশন ভোটারবিহীন নির্বাচন করতে ১ কোটি ১২ লাখ ভোটার তৈরি করেছিল। সেটা করতে গিয়ে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। এখন তারাই নির্বাচনের কথা বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলছে।
রাশেদ খান মেনন বলেন, বিএনপি-জামায়াত পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চায়। ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, সিলেটে শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে বোমা হামলায় হত্যা, সুরঞ্জিত সেনের ওপর বোমা হামলা, হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজারে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের ওপর বোমা হামলার মধ্য দিয়ে এ দেশে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের প্রক্রিয়া চালু হয়। অস্বাভাবিক সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে তারা ক্ষমতায় যেতে চায়। যাদের হাতে নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে, তারা কখনোই নিরাপদ হতে পারে না।
বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য টেনে রাশেদ খান মেনন বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘নির্বাচনের প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে কোনো সংলাপে বসবেন না।’ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংলাপের বিকল্প নেই। সেই সংলাপ না করার প্রত্যয় ঘোষণার মধ্য দিয়ে তাঁরা পুনরায় অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা তৈরি করতে চক্রান্ত করছেন।
ওয়ার্কার্স পার্টির সিলেট জেলার সভাপতি সিকন্দর আলীর সভাপতিত্বে ও জেলার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দিনবন্ধু পালের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ সদস্য গোলাম হোসেন আজাদ, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবদুল্লাহ খোকন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী আলফাজ হোসেন, নারী মুক্তি সংসদের সহসভাপতি রীতা আক্তার, বাংলাদেশ যুব মৈত্রী সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন প্রমুখ।