যশোর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৬ দিন পর পাঠদান শুরু

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্রলীগের আন্দোলনের পর শিক্ষকদের ধর্মঘটে অচল হওয়া যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষা কার্যক্রম ২৬ দিন পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। গতকাল শনিবার শিক্ষকেরা ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ার পর আজ রোববার থেকে পাঠদান ও ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বহনকারী বাসচালকের কাছ থেকে চাবি কেড়ে নেওয়া, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কক্ষের শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ও লিফট বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনার বিচার দাবিতে গত ২২ জুলাই থেকে ধর্মঘট করছিলেন শিক্ষকেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান ও পরীক্ষা বন্ধ রেখে ২১ দিন ধরে ধর্মঘটে থাকা শিক্ষকেরা গতকাল সাধারণ সভা করে ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা দেন।

ধর্মঘট স্থগিতের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি সৈয়দ মো. গালিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘কতিপয় শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তাদের বহনকারী গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেয়। এসি ও লিফট বন্ধ করে দেয়। এই অপমান ও লাঞ্ছনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে ধর্মঘট শুরু করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ১৯ আগস্ট ক্যাম্পাসে ফ্রি হেলথ ক্যাম্প অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ক্যাম্পাসে আসবেন। ওই অনুষ্ঠানের প্রতি সম্মান জানিয়ে ও উপাচার্য মহোদয়ের বিচারের আশ্বাসে আপাতত ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে।’

শিক্ষকেরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর আজ সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের পদচারণে ক্যাম্পাস মুখর হয়ে ওঠে। দীর্ঘদিন পর ক্লাসে ফিরতে পেরে তাঁদের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ফি কমানো, নবনির্মিত একাডেমিক ভবনে লিফট স্থাপন, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতিসহ ১২ দফা দাবিতে গত ১৭ জুন বিকেল থেকে আন্দোলন শুরু করে ছাত্রলীগ। সেই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৬টি বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ভবনে লিফট স্থাপনের ঘোষণা দিলে ছাত্রলীগ আন্দোলন স্থগিত করে।

এরপর ক্যাম্পাস ঈদের ছুটি হয়ে যায়। আবার ক্যাম্পাস চালু হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের কথা বলে অনলাইনে পাঠদান ও পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি। এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বহনকারী বাসের চাবি কেড়ে নেন। শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের অফিস কক্ষের এসি ও লিফট বন্ধ করে দেন। এতে শিক্ষকেরা অপমানিত হয়েছেন দাবি করে শিক্ষক সমিতির ডাকে গত ২২ জুলাই থেকে ধর্মঘট শুরু করেন। এ কারণে প্রায় দুই মাস বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকে।