মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় বাল্কহেডের ধাক্কায় পিকনিকের একটি ট্রলার ডুবে গেছে। এ ঘটনায় পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। নিখোঁজ আছেন আরও অন্তত আটজন। আজ শনিবার রাত আটটার দিকে উপজেলার তালতলা-গৌরগঞ্জ খালের রসকাঠি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
লাশ উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সাত বছরের একটি শিশু, একজন নারী (৩৪) ও তিন তরুণ আছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
লৌহজং ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা কায়েস আহম্মেদ লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, রাত আটটার দিকে তাঁরা দুর্ঘটনার খবর পান। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, স্থানীয় লোকজন চারজনের লাশ উদ্ধার করেছেন। তাঁরা গিয়ে আরও একজনের লাশ উদ্ধার করেন। তিনি বলেন, পিকনিকের ট্রলারে ছিলেন ৪৬ জন। ট্রলারডুবির ঘটনায় এখনো আটজন নিখোঁজ আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, আজ দুপুরের পর সিরাজদিখান উপজেলার লতাব্দি ইউনিয়নের নারী-শিশুসহ ৪৬ জন ব্যক্তি ট্রলারে করে পদ্মা নদীতে পিকনিকে যান। পিকনিক শেষে ট্রলারটি উচ্চ শব্দে গান বাজাতে বাজাতে তালতলা-গৌরগঞ্জ খাল দিয়ে লতাব্দির দিকে যাচ্ছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে একটি বাল্কহেড বালু আনতে পদ্মা নদীর দিকে যাচ্ছিল। রাত আটটার দিকে ট্রলারটি লৌহজংয়ের রসকাঠি এলাকায় পৌঁছালে বাল্কহেডটি ট্রলারের ওপরে উঠে যায়। বাল্কহেডের ধাক্কায় সঙ্গে সঙ্গে ট্রলারটি পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় ট্রলারের অধিকাংশ যাত্রী সাঁতরে উঠলেও ১৩ জন পানিতে তলিয়ে যান। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। বাকিরা নিখোঁজ।
লৌহজং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অখিল রঞ্জন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের সামনে একজন নারীর লাশ আছে। বাকিদের লাশ হাসপাতাল থেকে তাঁদের বাড়িতে নেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। এখনো কারও পরিচয় জানা যায়নি। নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের কাজ চলছে।’
স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, উঠতি বয়সী তরুণেরা নিয়মিত ট্রলারে বিকট শব্দে গান বাজিয়ে পিকনিকে যান। আশপাশে কী আছে, সেটা তাঁরা খেয়াল করেন না। বর্ষা মৌসুমে দিনরাত ২৪ ঘণ্টায় তালতলা-গৌরগঞ্জ খাল দিয়ে শত শত বাল্কহেড চলাচল করে। এতে প্রায় সময় নৌ দুর্ঘটনা ঘটে। গত বছর এমন একটি দুর্ঘটনা ঘটার পর প্রশাসনের নজরদারিতে কয়েক দিন বাল্কহেড চলাচল বন্ধ ছিল। নৌ দুর্ঘটনা রোধে ওই খাল দিয়ে বাল্কহেড চলাচল বন্ধের কথা বলেন স্থানীয় লোকজন।