জিনের বেগম বলে পরিচয় দেওয়া এক নারীসহ গ্রেপ্তার ৪

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

বেহেশতে জিনদের জন্য মসজিদ বানানোর কাজ চলছে। জিনের সন্তানদের খাওয়াদাওয়ার খরচ দরকার। এসব কথা বলে প্রবাসীসহ কয়েকজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় অর্থ। টাকা না দিলে ওই ব্যক্তির সন্তানেরা ক্ষতির শিকার হবেন এমন ভয়ভীতিও দেখানো হয়।

এ ঘটনা দিনাজপুর সদর উপজেলায়। প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী এক প্রবাসী নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল শনিবার রাতে পৌর শহরের পাটুয়াপাড়া এলাকা থেকে জিনের বেগম পরিচয় দেওয়া এক নারীসহ প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা– পুলিশ। আজ রোববার ওই নারীর অভিযোগটি আমলে নিয়ে প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আজ দুপুর ১২টায় দিনাজপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জিনের বেগম পরিচয় দেওয়া প্রতারক চক্রের সদস্যদের আটকের কথা জানান জেলা পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন পৌর শহরের পাটুয়াপাড়ার বাসিন্দা মো. বাবু মিয়ার স্ত্রী লাইজু বেগম (৪০) (জিনের বেগম পরিচয় দেওয়া), তাঁর ভাগনি ইতালিপ্রবাসী রাসেল মিয়ার স্ত্রী আখি সূর্বণা (৩০), আখি সুবর্ণার বাবা আলতাফ হোসেন (৫২) ও আলতাফের ছেলে আল ইমরান আনন্দ (২৭)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, প্রতারক চক্রটি একই পরিবারের সদস্য। প্রায় ১০ বছর ধরে জিনের বেগম পরিচয় দিয়ে প্রবাসী সহজ–সরল নারীদের টার্গেট করে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সারওয়ার হোসেনের মায়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক দিনাজপুর শাখা থেকে এভাবে টাকা নিচ্ছিল চক্রটি। সারওয়ার হোসেন কয়েক দিন আগে দেশে আসেন। দুই দিন আগে থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর প্রযুক্তির সহায়তায় চক্রটিকে শনিবার রাতে পাটুয়াপাড়া জাগরণী ক্লাব–সংলগ্ন একটি তিনতলা ভবন থেকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল, চারটি অ্যান্ড্রয়েট মুঠোফোন, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দুটি ভিসা ডেভিট কার্ড, আখি সূর্বণা নামে একটি মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেকবই জব্দ করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শেখ জিন্নাহ আল মামুন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারক চক্রটি তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের বিরুদ্ধে আদালতের কাছে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।