শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় মায়ের হাত ধরে জীবনের প্রথম দিন বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চাপায় মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার নাগেরপাড়া এলাকায় একটি মাদ্রাসার সামনে নাগেরপাড়া-গোসাইরহাট সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া মেয়েটির নাম আদিবা (৫)। সে গোসাইরহাটের রানীসার এলাকার বেরাহান উদ্দিন ও মাহমুদা আক্তার দম্পতির মেয়ে। গতকাল রোববার আদিবাকে স্থানীয় নাগেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুশ্রেণিতে ভর্তি করা হয়েছিল।
শিশুটির স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোসাইরহাটের নাগেরপাড়া ইউনিয়নের রানীসার গ্রামের বোরহান উদ্দিন ভূমি মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় চাকরি করেন। চার সন্তান নিয়ে স্ত্রী মাহমুদা আক্তার নাগেরপাড়া বাজারে একটি ভাড়ার বাসায় থাকেন। মাহমুদার হাত ধরে হেঁটে ভর্তির পর আজ প্রথম দিন নাগেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাচ্ছিল আদিবা। সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয় থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে একটি মাদ্রাসার সামনে পৌঁছালে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আদিবাকে চাপা দেয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন আদিবাকে উদ্ধার করে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনার পর অটোরিকশাচালক ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অটোরিকশাটি জব্দ করেছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আলমগীর কবির প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁদের বিদালয়ের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকালই মেয়েটিকে তার মা ভর্তি করেছিলেন। আজ সে প্রথম স্কুলে আসছিল। এভাবে তার মৃত্যু মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।
আদিবার বড় ভাই ১৬ বছর বয়সী ইমরান হোসেন বলে, ‘আমারা চার ভাইবোন ছিলাম। বাবা ঢাকায় চাকরি করেন। মায়ের সঙ্গে গ্রামে থাকি। আদিবা আমাদের নয়নের মণি ছিল। আজ তার জীবনের প্রথম স্কুল ছিল। সে এভাবে আমাদের ছেড়ে চলে যাবে, ভাবতে পারিনি।’
গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুষ্পেন দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চাপায় শিশুটি মারা গেছে। শিশুটির পরিবারের চাওয়া অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর পলাতক অটোরিকশাচালককে ধরার চেষ্টা চলছে।