কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণসহ নানা অভিযোগে করা মামলায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক-সংলগ্ন একটি হোটেলের সামনে থেকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে তাঁকে আটক করা হয়। পরে বিকেলে কুমিল্লা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ করিম খান তাঁকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার ওই ছাত্রলীগের কর্মীর নাম রাকেশ দাস। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগপর্যন্ত তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-ইলাহীর পক্ষের রাজনীতি করতেন। আজ সদর দক্ষিণ থানার কোটবাড়ী ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মো. শাখাওয়াত হোসেন বাদী হয়ে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি মামলা করেন। এজাহারে নিজেকে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক বলে দাবি করেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এ এফ এম আবদুল মঈনকে প্রধান আসামি করে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ ও ৫০ থেকে ৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলার ১৪ নম্বর আসামি রাকেশ দাস।
এদিকে রাকেশ দাস গ্রেপ্তারের পর থেকে আলোচনা চলছে, গত ১ অক্টোবর মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বাদী। মামলা প্রত্যাহার-সংক্রান্ত একটি হলফনামাও এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। জানতে চাইলে বাদী শাখাওয়াত হোসেন আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘হলফনামাটি সঠিক। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য এটি প্রস্তুত করেছিলাম। পরে মামলাটি তুলে নেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য সমন্বয়কেরা মামলাটি তুলে না নিতে অনুরোধ করেছিলেন। তাই মামলাটি চলছে।’
শাখাওয়াত হোসেন বলেন, এক আইনজীবীর কাছে হলফনামাটি দিয়েছিলেন, সেখান থেকে কোনোভাবে সেটি সংগ্রহ করে আসামিরা মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে অপপ্রচার করছেন। গ্রেপ্তার রাকেশ দাস আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর সরাসরি হামলা করেছেন। অনেক শিক্ষার্থীকে আহত করেছেন। তাঁরা তাঁর বিচার চান। রাকেশ নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ক্যাডার। শাখা ছাত্রলীগের সামনের কমিটিতে তাঁর বড় পদে যাওয়ার কথা ছিল।
ডিবির ওসি সাজ্জাদ করিম খান বলেন, ‘আমরা বাদীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি মামলাটি প্রত্যাহার করেননি। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে রাকেশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে এখন ডিবির হেফাজতে রাখা হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার সকালে তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।’