নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় ইজারাদারকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে থাকা বিআইডব্লিউটিএর ঘাট দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত মোখলেছুর রহমান নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তিনি ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
গত বুধবার কাউন্সিলর মোখলেছুর রহমানের নেতৃত্বে তাঁর লোকজন ঘাটটি দখলে নেন। মদনগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি ও বিআইডব্লিউটিএর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন ইজারাদার আবদুল কাদির। তিনি বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা।
তবে ঘাট দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে কাউন্সিলর মোখলেছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বা তাঁর কোনো লোক ঘাট দখলের সঙ্গে জড়িত নন। স্বার্থের কারণে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক মাসুদ কামালের সঙ্গে কথা বলে ঘাট দখল করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘাটটি কাউন্সিলর মোখলেছুর রহমানের লোকজন দখলে নিয়েছেন বলে শুনেছি। অভিযান চালিয়ে একটি ট্রলার জব্দ করা হলেও পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। আজও (মঙ্গলবার) ঘাটটি দখলে রাখা হয়েছে বলে জেনেছি। এ বিষয়ে বন্দর থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের ১১ জুলাই এক বছরের জন্য বিআইডব্লিউটিএর মদনগঞ্জ লঞ্চঘাটটি ইজারা নেন আবদুল কাদির। গত সিটি নির্বাচনে তিনি সাবেক কাউন্সিলর ফয়সাল প্রধানের পক্ষে কাজ করেন। নির্বাচনে মোখলেছুর রহমানের কাছে পরাজিত হন ফয়সাল প্রধান। এর জের ধরে গত বুধবার কাউন্সিলর মোখলেছুর রহমানের নেতৃত্ব তাঁর লোকজন ঘাটটি দখলে নেন।
এ ঘটনায় মদনগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দেন আবদুল কাদির। এরপর পুলিশ দুজনকে আটক করে নিয়ে আসে। একজনকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। অপর একজনকে আদালতে পাঠানো হলে তিনি জামিনে মুক্তি পান। রোববার বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে কাউন্সিলরের লোকজনের একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার জব্দ করে নিয়ে আসেন। পরে মুচলেকা নিয়ে ট্রলারটি ছেড়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে ঘাটটি কাউন্সিলরের লোকজনের দখলে রয়েছে।
ইজারাদার আবদুল কাদির প্রথম আলোকে বলেন, তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। আবদুল কাদির অভিযোগ করে বলেন, গত সিটি নির্বাচনে তিনি কাউন্সিলর প্রার্থী ফয়সাল প্রধানকে সমর্থন দিয়েছিলেন। এ কারণে কাউন্সিলর মোখলেছুর ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর ঘাট দখল করেছেন।
এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কাউকে জোর করে ঘাট দখলে রাখতে দেওয়া হবে না।