মক্তব থেকে বাড়ি ফেরার পথে মাইক্রোবাসের চাপায় নিহত হয়েছে চার শিশু। আজ রোববার সকাল সোয়া সাতটার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের খোকসার শিমুলিয়া কুঠিপাড়া গ্রাম এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুদের মধ্যে দুজন আপন বোন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত এক শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা প্রায় চার ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান।
নিহত চার শিশু হলো কুঠিপাড়া এলাকার পালন শেখের মেয়ে তানজিলা আক্তার (১৪) ও মারিয়া খাতুন (১১), হানিফ শেখের মেয়ে মিম খাতুন (১২) ও হেলালের মেয়ে যুথি খাতুন (৯)। আহত ফাতেমা খাতুন (৯) আনারুল ইসলামের মেয়ে।
কুষ্টিয়া চৌড়হাস হাইওয়ে থানা–পুলিশ সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে প্রবাসী যাত্রী নিয়ে একটি মাইক্রোবাস চুয়াডাঙায় যাচ্ছিল। এ সময় খোকসা শিমুলিয়া এলাকায় স্থানীয় একটি মক্তবে পড়ে কয়েক শিশু সড়কের ডান পাশ দিয়ে বাড়ি ফিরছিল। সকাল সোয়া সাতটার দিকে মাইক্রোবাসটি হঠাৎ বাঁ দিক থেকে ডান দিকে চলে যায়। চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে এক শিশু মারা যায়। আশপাশের লোকজন গাড়ির নিচ থেকে অন্যদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠান। এর মধ্যে একজন খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং দুজন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যায়।
ঠিপাড় মসজিদের ইমাম ও মক্তবের একমাত্র শিক্ষক আবদুল হক বলেন, সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে মক্তবের প্রায় ১৩ জন ছাত্রছাত্রীকে ছুটি দিয়ে তিনি মসজিদে ছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দ পেয়ে তিনি বের হন। বের হয়ে তিনি দুর্ঘটনাটি দেখেন।
চৌড়হাস হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, শিশুরা সড়কের ডান পাশ দিয়ে বাড়ি ফিরছিল। এ সময় ঢাকা থেকে আসা কুষ্টিয়াগামী মাইক্রোবাসটির চালক ভুল পাশ দিয়ে ডান পাশে গিয়ে দ্রুতগতিতে শিশুদের চাপা দেয়। ঘটনাস্থলে এক শিশু ও বাকি তিনজন হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। চালক পালিয়েছেন। মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাড়ির নিচ থেকে চাপা পড়া শিশুদের উদ্ধারের সময় গাড়িটি পাশের খাদের পানিতে পড়ে যায়। তবে গাড়ির চালক দৌড়ে পালিয়ে যান। যাত্রীদের কোনো ক্ষতি হয়নি। শিশুদের প্রাণহানির ঘটনায় স্থানীয় লোকজন সড়কে বাঁশ দিয়ে অবরোধ করেন। প্রায় চার ঘণ্টা পর পুলিশের সহায়তা যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে খোকসা থানার ওসি আননুর যায়েদ প্রথম আলোকে বলেন, চার ঘণ্টা সড়ক অবরোধ ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। লাশ চারটি গ্রামে নেওয়া হয়েছে।