নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি স্টিল কারখানায় লোহা গলানোর সময় চুল্লি বিস্ফোরণে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার ভুলতা এলাকার রহিমা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স লিমিটেডের কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
চুল্লি বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে আরও ছয় শ্রমিক রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ওই শ্রমিকের নাম শঙ্কর (৪০)। দগ্ধ অন্য শ্রমিকেরা হলেন জুয়েল (২৫), রাব্বি (৩৫), ইব্রাহিম (৩৫), ইলিয়াস (৩৫), নিয়ন (২০) ও আলমগীর হোসেন (৩৩)। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন এস এম আইয়ুব হোসেন বলেন, দগ্ধ সাতজনের মধ্যে একজন মারা গেছেন। অন্য ছয় শ্রমিকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের মধ্যে রাব্বির শরীরের ৯৮ শতাংশ; নিয়ন, জুয়েল ও ইলিয়াসের ৯৫ শতাংশ; আলমগীরের ৯০ শতাংশ এবং ইব্রাহিমের শরীরের ২৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, লোহা গলানোর কারখানাটি এখনো নির্মাণাধীন। পরীক্ষামূলকভাবে লোহা গলানোর কাজ করা হচ্ছিল। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে লোহা গলানোর চুল্লিতে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের পর গলিত উত্তপ্ত লোহা শরীরে পড়ে সাতজন গুরুতর দগ্ধ হন।
ঘটনার পর আড়াইহাজার ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। আড়াইহাজার ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা শহীদ আলম বলেন, বেলা সাড়ে তিনটায় ঘটনা ঘটলেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে তাঁরা পরে জানিয়েছেন। এ ছাড়া যেখানে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে কোনো অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দেখতে পাননি তাঁরা। শ্রমিকদের যে ধরনের নিরাপত্তার সরঞ্জাম ব্যবহার করার কথা, সেগুলো ব্যবহার করা হয়নি বলে কারখানা সূত্রে তিনি জানতে পেরেছেন।
কারখানার দুজন শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদাসীন ছিল। শ্রমিকদের নিরাপত্তার পোশাক দেওয়া হয় না বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে রহিমা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স লিমিটেডের তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম বলেন, ছয় মাস ধরে কারখানায় লোহা উৎপাদনের কাজ করা হচ্ছে। কারখানাটিতে সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা আছে। শ্রমিকেরাও সেফটি জ্যাকেট (নিরাপত্তা পোশাক) পরিহিত ছিলেন। তিনি বলেন, বিস্ফোরিত উত্তপ্ত লোহার কারণে শ্রমিকেরা দগ্ধ হন।