ফরিদপুরের মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে প্রতিমায় আগুন দেওয়ার অভিযোগ তুলে দুই শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
একই সঙ্গে তাঁকে কেন চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না, সে ব্যাপারে আগামী ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউপি-১ শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এ কে এম আনিছুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল সোমবার ওই প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন সহকারী সচিব।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামে ১৮ এপ্রিল দুই শ্রমিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯-এর ৩৪ (৪) (খ) (ঘ) ধারা অনুযায়ী, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন। ডুমাইন ইউপির চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে উল্লিখিত অভিযোগের কারণে তাঁর দ্বারা যেহেতু ইউপির ক্ষমতা প্রয়োগ সমীচীন নয় মর্মে সরকার মনে করে, সেহেতু উল্লিখিত ধারার তাঁকে নিজ পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।’
এ ছাড়া একই দিনে সহকারী সচিব স্বাক্ষরিত চিঠিতে ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে একটি কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে বলা হয়, ‘একই অভিযোগে শাহ আসাদুজ্জামানকে তাঁর চেয়ারম্যানের পদ থেকে চূড়ান্তভাবে কেন অপসারণ করা হবে না, তা পত্র প্রাপ্তির ১০ কর্মদিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসক ফরিদপুরের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হলো।’
গত ১৮ এপ্রিল ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী সর্বজনীন কালীমন্দিরের প্রতিমার শাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী মন্দির–সংলগ্ন পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক নির্মাণকাজে জড়িত শ্রমিকদের সন্দেহ করেন। পরে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আটকে চার নির্মাণশ্রমিককে মারধর করা হয়। রাতেই দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
শ্রমিকদের আটকে রেখে মারধরের তিনটি ভিডিও পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওতে শ্রমিকদের মারধরে ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামানকে অংশ নিতে দেখা যায়। এর আগে ২০২৩ সালে ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামানকে ইউএনওর ওপর হামলা ও টিসিবির কার্ড চুরির অভিযোগে দুবার সাময়িক বরখাস্ত করেছিল স্থানীয় সরকার বিভাগ। তবে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে দুবারই তিনি পদ ফিরে পান।