বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘আমেরিকা থেকে ঘুরে এসেছেন খালি হাতে। বহু চেষ্টা করেছেন ভিসা নীতি বাতিলের। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) শোনেনি। বাংলাদেশের মানুষও শোনে না আপনার কথা। এ অবস্থায় আপনি পদত্যাগ করেন। একটি নির্দলীয়-নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন। আমরা ভোট দিতে চাই। এবার আমাদের ভোট আমরা দেব। ভোট চুরি আর করতে দেওয়া হবে না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কালাকচুয়া খন্দকার ফুড গ্যালারি মাঠে বিএনপির রোডমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চে অংশ নিচ্ছেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয়, জেলা ও তৃণমূল পর্যায়ের হাজারো নেতা-কর্মী। রোডমার্চটি কুমিল্লা থেকে ফেনী হয়ে চট্টগ্রামের নেভালে বিএনপির কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘চালের সের ৮০ টাকা। ডিমের ডজন ১৫০ টাকা। বাচ্চাদের খাওয়ানো যাচ্ছে না। সবকিছুর দাম আমাদের আয়ত্তের বাইরে। লুটেরা, ফ্যাসিবাদী সরকার নির্যাতন করে বুকের ওপর উঠে আছে। শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে চাঁদপুরের ডিসি ৩৬৪ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। চাঁদপুরে বালু নিয়ে কী ভয়াবহ অবস্থা!’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না সরকার। খালেদা জিয়া যদি সুস্থ হয়ে জনগণের সামনে দাঁড়ান, তাহলে তারা (আওয়ামী লীগ) একমুহূর্ত দাঁড়াতে পারবে না। হাসিনার অধীন আমরা কোনো নির্বাচনে যাব না। কারণ, ওরা ভোটচোর। এখন আমাদের এক দফা দাবি, হাসিনা তুই কবে যাবি। এই সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকা। দুর্নীতি করার জন্য ওরা টিকে থাকতে চায়।’
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এতে বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য জাকারিয়া তাহের সুমন, কুমিল্লা বিভাগীয় সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জসিম উদ্দিন, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী ও সদস্যসচিব ইউসুফ মোল্লা।
এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সুয়াগঞ্জ এলাকায় অবস্থান করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী। পদুয়ার বাজার এলাকায় অন্তত ১০ হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি থেকে আজীবন বহিষ্কৃত মনিরুল হক সাক্কু। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলের দুঃসময়ে মাঠে থাকতে হবে। আমি আদি বিএনপি। তাই এসেছি।’