ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন

উপনির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন আ.লীগের তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন, মাহবুবুল বারী চৌধুরী ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান আলম (বাঁ থেকে)
ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগের তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী সরে দাঁড়ালেন। আজ শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের নেতৃত্বে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে তাঁরা নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। তিনজন সরে যাওয়ায় এই নির্বাচনে বর্তমানে বিএনপির দলছুট নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঞাসহ পাঁচজন প্রার্থী আছেন।

উকিল আবদুস সাত্তার ভূঞাকে উপনির্বাচনে জিতিয়ে আনতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া দলের তিন নেতাকে তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বলে। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা তিনজন হলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম।

এই আসনের উপনির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাঁদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। ১৫ জানুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। এখন পর্যন্ত এই উপনির্বাচনে উকিল আবদুস সাত্তার ভূঞাসহ পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় উকিল আবদুস সাত্তারের জয়ের পথ অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। উপনির্বাচনের অন্য প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির দুবারের সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা, দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবদুল হামিদ ভাসানী, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ এবং জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা-কর্মী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার উকিল আবদুস সাত্তারকে এই আসনে জয়ী করাতেই এসব ছক করেছে। আওয়ামী লীগের তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে চাপ প্রয়োগ ও বাধ্য করে প্রত্যাহার করানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে দুজনের অবস্থান বেশ ভালো ছিল। বিশেষ করে মো. মঈন উদ্দিন ও মাহবুবুল বারী চৌধুরীর সঙ্গে আবদুস সাত্তারের লড়াই হতো।

স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, দলীয় কিছু লোকের বিরোধিতার কারণে মঈন উদ্দিন সামান্য ভোটের ব্যবধানে গত নির্বাচনে পরাজিত হন। এর পর থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে তিনি বেশ আলোচনায় আছেন। গত নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ৮৩ হাজার ৯৯৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মঈন উদ্দিন পেয়েছিলেন ৭৫ হাজার ৪১৯ ভোট।

প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সোয়া ১১টার দিকে আমরা তিনজন প্রার্থী একসঙ্গে প্রত্যাহার করেছি। দল আসনটি উন্মুক্ত রেখেছে। আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতেই প্রত্যাহার করেছি।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসনটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উন্মুক্ত রেখেছে। আমাদের দলের তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজ নিজ দায়িত্বে প্রত্যাহার করেছেন। প্রত্যাহারের সময় তাঁদের সঙ্গে আমি উপস্থিত ছিলাম।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিজয়ী হয়েছিলেন। ১১ ডিসেম্বর তিনি জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এই আসনে উপনির্বাচনের হবে।