বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের দমদমা গ্রামে ১৪ দিনে ল্যাম্পি স্কিন ও খুরারোগে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ২১টি গরু মারা গেছে। সর্বশেষ আজ মঙ্গলবার সকালে একটি গরু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বর্তমানে আরও অর্ধশতাধিক গরু এসব রোগে আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন মালিকেরা। বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা।
গতকাল সোমবার সকালে দমদমা গ্রামে জানা যায়, পূর্বপাড়া এলাকায় হাসান আলী নামের এক ব্যক্তির ১৪ মণ ওজনের একটি ফ্রিজিয়ান ষাঁড় খুরারোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। একই দিন সকালে দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা ভুট্টু মিয়ার একটি গরু মারা যায়। এর আগে একই গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ও রবিউলের দুটি, পিন্টু, ফেরদৌস, চাঁন মিয়া, নান্টু, মেজর, বগা, রায়হান, হাসান আলী ও বাদল মিয়ার একটি করে মোট ২০টি গরুর মৃত্যু হয়েছে।
সর্বশেষ আজ সকালে পূর্বপাড়ার বাসিন্দা শ্যামল হোসেনের একটি গরু মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হাসান আলী নামের আরেক মালিক জানান, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তাঁর গরুটি খুরারোগে আক্রান্ত ছিল। পায়ের খুরা অনেকটা সেড়ে গিয়েছিল। তবে গতকাল সকালে পানি খাওয়ানোর পর অসুস্থ হয়ে গরুটি কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যায়।
হোসেন আরও বলেন, গত কোরবানি ঈদে তাঁর গরুটির দাম উঠছিল সাড়ে চার লাখ টাকা। ইচ্ছা ছিল সামনের কোরবানির ঈদে এটি বিক্রি করবেন। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল। আরেক মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি একজন গরিব মানুষ, আমার দুটি গরু মারা যাওয়ায় এখন নিঃস্ব হয়ে গেলাম।’
খবর পেয়ে গতকাল সকালে গ্রামে আসেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আমিরুল ইসলামের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ দল। তাঁরা গ্রামে ঘুরে সংশ্লিষ্ট গরুর মালিকদের নানা পরামর্শ দেন। আমিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘খুরা ও ল্যাম্পি স্কিন এ দুটি গরুর ভয়ানক রোগ। আগে থেকে প্রতিষেধক না দেওয়া হলে আক্রান্ত গরুকে বাঁচানো যায় না। গরু আক্রান্ত হলে বেশির ভাগ মালিক উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কার্যালয়ে নিয়ে আসতে চান না। অদক্ষ চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করান। এ কারণে গরুর মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যায়।’
একটি গ্রামে এত গরু মারা যাওয়ায় বিষয়টি তাঁদের ভাবিয়ে তুলেছে জানিয়ে আমিরুল ইসলাম বলেন, তিনি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। আজ থেকে ওই গ্রামে একটি চিকিৎসক দল সার্বক্ষণিকভাবে অবস্থান করে অসুস্থ গরুগুলোর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করবে।