শরীয়তপুরের নড়িয়ায় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণে দুই পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নড়িয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা করেছে।
শরীয়তপুর–২ আসনে (নড়িয়া-সখিপুর) আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খালেদ শওকত আলী। ওই ২ জনসহ বিভিন্ন দলের ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, গতকালে রাতে নড়িয়া বাজারে এনামুল হক ও খালেদ শওকতের সমর্থকদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের সমর্থকেরা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় জড়িয়ে পড়েন। দুই পক্ষই প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে দুই পক্ষের সমর্থকেরা শতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। এতে দুই পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মাজেদা শওকত হাসপাতাল ও শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী খালেদ শওকত আলী বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে সমর্থকদের নিয়ে তিনি নড়িয়ায় আসেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে নড়িয়া বাজারে তাঁর সমর্থকদের ওপর মোস্তফা শিকদার ও সুমন শিকদারের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। তাঁরা উভয়ই আওয়ামী লীগের সমর্থক। হামলায় তাঁর সমর্থক কনক লস্কর, নড়িয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন হামজা, কেদারপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তপন ছৈয়াল ও সুমন মোড়ল আহত হয়েছেন। ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়েছে। তিনি এ ঘটনায় মামলা করবেন।
খালেদ শওকতের লোকজন কেব্ল ব্যবসার বিরোধ নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় জড়িয়েছেন বলে দাবি আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকের। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি জানার পর পুলিশ ও রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন তাঁরা। কেউ যাতে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট ও বিশৃঙ্খলা না করতে পারেন, তার দিকেও খেয়াল রাখার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেছেন তিনি।
শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও নড়িয়া পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘খালেদ শওকত আলীর সমর্থকেরা কেব্ল ব্যবসার বিরোধ নিয়ে রাতে বাজারে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিলেন। ওই সময় তাঁরা আমাদের সমর্থকদের ধাওয়া করেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খালেদ–সমর্থকদের হামলায় আমাদের কর্মী সোহেল আহত হয়েছেন। পরে খালেদ শওকত আলী নড়িয়া বাজারে এসে আমাদের সমর্থকদের গালাগালি শুরু করেন। তাঁর সমর্থকেরা অনেক ককটেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন।’
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এ সময় বেশ কিছু ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। উভয় পক্ষই থানায় অভিযোগ করবে বলে জানিয়েছে। এখনো কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। এ ছাড়া ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে গতকাল রাতেই মামলা করেছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।