ঈদুল আজহা সামনে রেখে পদ্মা সেতু দিয়ে বাড়ি ফিরছেন দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলোর যাত্রীরা। এতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজা থেকে শ্রীনগর ছনবাড়ি ৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তৈরি হয় তীব্র যানজট। তবে দুপুরের পর থেকে যানবাহন কমতে থাকে। বেলা তিনটার পর থেকে যানজটমুক্ত হয় সড়ক ও সেতু এলাকা। ফলে আজ বিকেল থেকে স্বস্তি নিয়ে এ পথ দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন যাত্রী ও চালকেরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদ সামনে রেখে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষেরা গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। এতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে পদ্মা সেতুতে দক্ষিণমুখী যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। সেই সঙ্গে রাতে সেতুর টোল প্লাজার ওজন স্কেলে কিছু ট্রাক অপেক্ষমাণ ছিল। রাতের তুলনায় আজ ভোরে ট্রাকের লেন আরও বড় হয়। ভোর থেকে ট্রাক, গণপরিবহন ও ছোট গাড়ির চাপও রাতের তুলনা বাড়ে। সেতুর টোল প্লাজায় যানবাহনগুলোকে টোল দিতে অপেক্ষা করতে হয়। এতে সব মিলিয়ে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা থেকে যানবাহন সারি হতে হতে সেটি শ্রীনগরের ছনবাড়ি এলাকা পর্যন্ত চলে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় ঘরমুখী যাত্রীদের। তবে বেলা একটার পর থেকে যানবাহনের চাপ কমতে থাকে। বিকেলে একেবারে ফাঁকা হয়ে যায় সেতু এবং এক্সপ্রেসওয়ে এলাকা। বিকেল থেকে স্বস্তির সঙ্গে ফিরতে থাকেন যাত্রী ও চালকেরা।
টোল প্লাজার ওজন স্কেলের ট্রাক লেনে বৃহস্পতিবার রাত কিছু ট্রাক আটকে রাখা হয়েছিল। এ জন্যই যানজট তৈরি হয়েছিল। দুপুরের পর যানজট কমতে শুরু করে। বিকেলে কোথাও কোনো জট ছিল না। সন্ধ্যার দিকে সব ধরনের যানবাহন সড়ক সেতু দিয়ে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে যাচ্ছে।জিয়াউল হায়দার, পরিদর্শক, মাওয়া ট্রাফিক পুলিশ
আজ বিকেল চারটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল সেতু এলাকায় এসে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে টোল পরিশোধ করে পদ্মা সেতু পারি দিচ্ছে। কখনো কখনো ১৫-২০টি মোটরসাইকেলে টোল প্লাজায় অপেক্ষমাণ দেখা যায়। তবে কোনো যানজট ছিল না। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এমন চিত্র ছিল সেতু এলাকায়।
এ সময় কয়েকজন যাত্রী বলেন, সকালের দিকে এ পথে তীব্র যানজটের কথা শুনেছিলেন। তাই বিকেলে পরে তাঁরা পদ্মা সেতু এলাকায় আসেন। এসেই দেখলেন, টোল প্লাজা একেবারেই ফাঁকা। কোনো রকম ভোগান্তি ছাড়াই অল্প সময়ের মধ্যে টোল দিয়ে সেতু পার হওয়া যাচ্ছে। ঈদের মাত্র দুদিন বাকি। এমন সময় সড়কে এর চেয়ে স্বস্তির আর কী হতে পারে।
পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা এলাকায় কথা হয় লক্ষ্মীপুর সদরের বাসিন্দা মিরাজ হোসেনের সঙ্গে। তিনি তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেল করে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। মিরাজ হোসেন বলেন, ‘পদ্মা সেতু হওয়ার আগে কত ভোগান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরতে হতো। পদ্মা সেতুর পর সেসব ভোগান্তিকে দুঃস্বপ্ন মনে হয়। সকালে যানজটের কথা শুনে কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিলাম। বিকেলে দেখলাম, এক্সপ্রেসওয়ে ফাঁকা, টোল প্লাজাও ফাঁকা। এতে স্বস্তির সঙ্গে বাড়ি যাচ্ছি আমরা।’
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক জিয়াউল হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, টোল প্লাজার ওজন স্কেলের ট্রাক লেনে বৃহস্পতিবার রাত কিছু ট্রাক আটকে রাখা হয়েছিল। এ জন্যই যানজট তৈরি হয়েছিল। দুপুরের পর যানজট কমতে শুরু করে। বিকেলে কোথাও কোনো জট ছিল না। সন্ধ্যার দিকে সব ধরনের যানবাহন সড়ক সেতু দিয়ে নির্বিঘ্নে গন্তব্যে যাচ্ছে।