দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ (হরিরামপুর, সিঙ্গাইর ও সদরের একাংশ) আসনে আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের দুই সমর্থকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দ গোলাম রাশেদ হরিরামপুর থানায় মামলাটি করেন। নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে কাজ না করায় এক ব্যক্তিকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ মামলা করার নির্দেশ দেন।
মামলার আসামিরা হলেন হরিরামপুর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মোল্লা (৪০) ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিফাত চৌধুরী (৩৫)। তাঁরা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসনে নৌকার প্রার্থী মমতাজ বেগমের কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন।
এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মমতাজ বেগম ও জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ দেওয়ান জাহিদ আহমেদ (টুলু) দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ৭ জানুয়ারি ভোটে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মমতাজকে ছয় হাজারের বেশি ভোটে হারিয়ে সংসদ সদস্য হন ট্রাক প্রতীকের দেওয়ান জাহিদ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভোটের আগে ২৬ ডিসেম্বর হরিরামপুর উপজেলার কৌড়ি এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদের সমর্থক সাখাওয়াত হোসেনকে নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য হুমকি দেন নৌকার সমর্থক ফরিদ ও রিফাত। একপর্যায়ে সাখাওয়াতকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেন তাঁরা। ওই দিন রাতেই সাখাওয়াত বাদী হয়ে ফরিদ, রিফাতসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০–২৫ জনকে আসামি করে হরিরামপুর থানায় মামলা করেন।
এদিকে মানিকগঞ্জ-২ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধানী কমিটি ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীর কর্মীকে প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় একটি প্রতিবেদন ইসিতে পাঠায়। ওই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জানুয়ারি ইসির আদেশক্রমে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব (আইন) মো. আবদুছ সালাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করার নির্দেশ দেন। মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপারকে সংশ্লিষ্ট থানায় এজাহার গ্রহণ করে ইসিকে নিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে।
ইসির চিঠিতে বলা হয়, গত ২৬ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ-২ আসনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণে অস্বীকার করায় শাখাওয়াত হোসেনকে শারীরিকভাবে আঘাত ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থক ফরিদ মোল্লা ও রিফাত চৌধুরী। তাঁরা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২–এর অনুচ্ছেদ ৭৩ বিধান লঙ্ঘন করেছেন মর্মে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দ গোলাম রাশেদ বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মোতাবেক হরিরামপুর থানায় তিনি এজাহার দায়ের করেছেন। মামলা নথিভুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা শাহ নূর-এ আলম। তিনি বলেন, আজ বিকেলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ–সংক্রান্ত একটি মামলা করেছেন। এতে নৌকার সমর্থক ফরিদ ও রিফাতকে আসামি করা হয়েছে।