বরিশালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেড়ে ১৪, নতুন আক্রান্ত ২৭৫

ডেঙ্গু ওয়ার্ডে প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সম্প্রতি বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

বরিশাল বিভাগে গতকাল রোববার সকাল ছয়টা থেকে আজ সোমবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বিভাগে ডেঙ্গুতে ১৪ জনের মৃত্যু হলো।

একই সময়ে বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ২৭৫ রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে বিভাগের সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ৯৩১ রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গতকাল রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমন (২২) নামের এক তরুণের মৃত্যু হয়। তিনি বরিশাল নগরের কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা। গত শনিবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২৭৫ ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬৭ জন ভর্তি হয়েছেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২২, বরিশালের অন্যান্য হাসপাতালে ৩৭, পটুয়াখালীতে ৪৫, ভোলায় ৩৯, পিরোজপুরে ৪২, বরগুনায় ১৪ ও ঝালকাঠিতে ৯ জন ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৭ হাজার ২৮৩ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬ হাজার ৩৩৮ জন।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঈদুল আজহার পরপরই বরিশালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত বিভাগে ডেঙ্গু রোগী ছিলেন মাত্র ৪৩৩ জন। মৃত্যু হয়েছিল দুজনের। অথচ আগস্টের প্রথম পাঁচ দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৯৭৩ রোগী। আর মারা গেছেন তিনজন। জুলাই মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসেন ৪ হাজার ৮৬৭ জন। এক মাসে  ৯জনের মৃত্যু হয়েছে।

মারা যাওয়া ১৪ জনের মধ্যে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ১০ জন, বরগুনার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ১ জন ও ভোলা সদরের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন ধরেই প্রতিদিন ২৪০ থেকে ৩০০ রোগী হাসপাতালে আসছেন। সঙ্গে অন্যান্য রোগীও আছে। এতে হাসপাতালগুলোকে বাড়তি চাপ নিতে হচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে পরিস্থিতি ততই জটিল হচ্ছে। এখন বিভাগের সব জেলায় সমানভাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সচেতনতার পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।