নিয়োগ পরীক্ষার আগে পছন্দের প্রার্থীকে চূড়ান্ত না করায় দলবল নিয়ে কলেজে তালা লাগিয়ে দেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। বৃহস্পতিবার সকালে ফুলকোচা কলেজে
নিয়োগ পরীক্ষার আগে পছন্দের প্রার্থীকে চূড়ান্ত না করায় দলবল নিয়ে কলেজে তালা লাগিয়ে দেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। বৃহস্পতিবার সকালে ফুলকোচা কলেজে

আওয়ামী লীগ নেতাদের পছন্দের প্রার্থীকে চূড়ান্ত না করায় কলেজে তালা

সিরাজগঞ্জে নিয়োগ পরীক্ষার আগে আওয়ামী লীগ নেতাদের পছন্দের প্রার্থীকে চূড়ান্ত না করায় একটি কলেজে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের ফুলকোচা কলেজে এ ঘটনা ঘটে।

বাগবাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতারা ওই কলেজে তালা লাগান। তাঁদের দাবি, কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ–বাণিজ্যে জড়িত থাকায় কলেজে তালা ঝোলানো হয়েছে। তবে কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদ রানা বলছেন, নিয়োগ–বাণিজ্যের কোনো সুযোগ নেই। তাঁকে চাপ দিতে আওয়ামী লীগ নেতারা কলেজে তালা দিয়েছেন।

ফুলকোচা কলেজ সূত্রে জানা গেছে, কলেজের অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে প্রথমে গত ৮ আগস্ট স্থানীয় ও জাতীয় দুটি পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। পরে ২০ আগস্ট সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। দুটি পদে ৩৩ জন আবেদন করেন। যাচাই-বাছাই শেষে ১৭ জন প্রার্থীকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য মনোনীত করা হয়। আগামীকাল শনিবার সকাল ১০টায় সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে ওই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগ পরীক্ষার আগেই বাগবাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমসহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতারা তাঁদের পছন্দের প্রার্থী স্থানীয় আনোয়ার হোসেনকে পরীক্ষার আগেই চূড়ান্ত করতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে চাপ দেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। এ অবস্থায় নিয়োগ পরীক্ষার দুই দিন আগে গতকাল সকালে বাগবাটি ইউপির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক হাসেম আলী, ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ইউনুস আলী, সাধারণ সম্পাদক মো. মিল্লাতসহ কয়েকজন ফুলকোচা কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদ রানার বিরুদ্ধে নিয়োগ–বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে কলেজে তালা লাগিয়ে দেন।

আওয়ামী লীগের নেতা হাসেম আলী বলেন, কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ–বাণিজ্য করেছেন। নিয়োগ–বাণিজ্য প্রতিহত করতেই কলেজে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

অধ্যক্ষ মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার আগে দুটি পদে তাঁদের পছন্দের দুজন প্রার্থীকে চূড়ান্ত করতে তাঁরা অনেকেই এসেছিলেন। তিনি তাঁদের জানিয়েছেন, মেধাভিত্তিক নিয়োগ হবে। নিয়োগ–বাণিজ্যের কোনো সুযোগ নেই। তাঁরা তাঁকে চাপ প্রয়োগ করতে বৃহস্পতিবার সকালে কলেজে তালা লাগিয়ে দেন। আজ শুক্রবার রাত পর্যন্ত তালা সেভাবে আছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য লোক মারফত বার্তা পাঠিয়ে পরীক্ষা স্থগিত করতে বলেছেন। এ জন্য পরীক্ষার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করে পরে জানানো হবে।

অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়। এটি ষড়যন্ত্র। তালা দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। দ্রুত এটি খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’

ফুলকোচা কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, ‘আমি কখনো চাপের কাছে মাথা নত করব না। দুটি পদে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রার্থী নিয়োগ দেওয়া হবে। এটি না পারলে সভাপতির পদ থেকে সরে যাব।’