রংপুরে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে নানা ধরনের গোখাদ্যের দাম কেজিপ্রতি ১২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতে কৃষক ও গরুর খামারিরা বিপাকে পড়েছেন।
কয়েক মাসে গোখাদ্যের দাম বেশ কয়েবার বেড়েছে। কিন্তু এই দাম বাড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দুধ এবং গরু ও ছাগলের মাংসের দাম বাড়েনি। এ পরিস্থিতিতে গবাদিপশু পালন করতে গিয়ে খামারি এবং ক্ষুদ্র কৃষকেরা বিপদে পড়েছেন। বাড়তি দামের চাপ সইতে না পেরে ছোট ও মাঝারি খামার বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
জেলার গোখাদ্য ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি গমের ভুসিতে ১২ টাকা, বুটের খোসায়
১০ টাকা, চালের খুদে ৫ টাকা, দানাদার ফিডে ৮ টাকা ও ধানের কুঁড়ায় ৩ টাকা দাম বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি বস্তা ভুসি (৩৭ কেজি) ২ হাজার ২৬০ টাকা, বুটের খোসা (২৫ কেজি) ১ হাজার ৫০০ টাকা, চালের খুদ (৫০ কেজি) ১ হাজার ৭০০ টাকা, দানাদার ফিড (২৫ কেজি) ১ হাজার ৩০০ টাকা ও ধানের কুঁড়া (৩৫ কেজি) ৫৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রংপুর নগরের খাসবাগ এলাকায় বাসিন্দা গরুর খামারি শাহাদাত হোসেন। তাঁর খামারে বর্তমানে ৮০টি গরু রয়েছে। এসবের মধ্যে ষাঁড় ছাড়াও দুধের গাভিও রয়েছে। গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খামার চালানো কষ্টকর হয়ে উঠেছে তাঁর। তিনি বলেন, ‘ছয় মাসের মধ্যে তিন দফায় গোখাদ্যের দাম বেড়েছে। কিন্তু দুধের দাম দু–তিন বছরের মধ্যে একবার বেড়েছে। চলতি জানুয়ারি মাসে ভুসি, বুটের খোসা ও খুদের দাম বেড়েছে। গাভিকে খড়ের পাশাপাশি এগুলো না খাওয়ালে শরীর ভালো থাকে না, দুধ কম হয়।’
শাহাদাত আরও বলেন, ‘খামারের গাভির পেছনে প্রতিদিন ২০-২২ হাজার টাকা খরচ হয়, কিন্তু দুধ বিক্রি করে এই টাকা ওঠে না। বর্তমানে গাভির খামারে লোকসান গুনতে হচ্ছে।’
খামারিরা খামার থেকে দুধ বিক্রি করেন প্রতি লিটার ৭০ টাকা। বিভিন্ন দোকানে এ দুধ বিক্রি হয় প্রতি লিটার ৮০ টাকা। পশুখাদ্যের দাম যেভাবে বেড়েছে, এতে প্রতি লিটার দুধ খামার থেকে কমপক্ষে ৮০ টাকা করে বিক্রি হলে লাভ না হলেও খরচটা উঠতে পারে—এমনটাই জানান বুড়িরহাট এলাকার খামারি রুবেল মিয়া।
পশুখাদ্য বিক্রেতা নজরুল ট্রেডার্সের মালিক নজরুল ইসলাম বলেন,মালামাল পরিবহন খরচ বেড়েছে। এ কারণে গোখাদ্যের দাম বেড়েছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলার আরাজী নিয়ামত গ্রামের গরুর খামারি বাদশা মিয়া বলেন, একটি ছোট গরু ৩০ হাজার কিনে লালনপালন করে ছয় মাসের মধ্যে বিক্রি জন্য উপযোগী করা হয়। এতে একটি গরুর পেছনে ব্যয় হয় সব মিলে ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু এটি হাটে বিক্রি করতে গেলে লাভ তো দূরের কথা, আসল টাকাই পাওয়া যায় না। তাই ে খামার বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।