রংপুরের গঙ্গাচড়ার গঞ্জিপুর এলাকায় বাস ও থ্রি-হুইলারের মুখোমুখি সংঘর্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আজমুদা আক্তার নামের এক শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গঙ্গাচড়া উপজেলার রংপুর-তিস্তা ব্যারাজ সড়কের গঞ্জিপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। হতাহত সবাই থ্রি-হুইলারের যাত্রী ছিলেন।
নিহত বাকিরা হলেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক দীপা রানী (৩৯) ও অজ্ঞাতনামা এক পুরুষ। আহত ব্যক্তিদের পরিচয় জানা যায়নি।
নিহত আজমুদার বাড়ি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ভেড়ভরি হাজিরহাট এলাকায়। ঈদে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটির হওয়ায় তিনি আজ ভোরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রংপুরে বাসে করে আসেন। এখানে এসে তিনি তাঁর নানার বাড়ি রংপুর শহরের হাসনা বাজার এলাকায় যান। সেখানে বিশ্রাম নেওয়ার দুই ঘণ্টা পর বাড়িতে যাওয়ার জন্য শহরের মেডিকেল মোড় থেকে থ্রি-হুইলারে বাড়ি যাচ্ছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পথে গঙ্গচড়া উপজেলার গঞ্জিপুর এলাকায় ওই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি।
নিহত আজমুদা আক্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৫১তম ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে থাকতেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হুসাইন মো. সায়েম।
সড়ক দুর্ঘটনায় মেয়ের মৃত্যুসংবাদ শুনে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন বাবা আবদুল আলীম। তিনি বিজিবির সদস্য। তিনি চট্টগ্রামে কর্মরত। তিনিও ঈদ করতে বাড়ি এসেছেন।
আলীম বলেন, ‘আজ সকালেই বাড়ি যাওয়ার আগে ফোন করে জানাল, “কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়িতে আসছি।” এই কথাই তার সঙ্গে শেষ কথা। কিছুক্ষণ পর এর-ওর মাধ্যমে জানতে পারি, মেয়ে আর নেই। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে।’
আলীম আরও বলেন, ‘ও বড় মেয়ে। কত কষ্ট করে মেয়ে আমার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। কত স্বপ্ন ছিল। বিসিএস ক্যাডার হবে। আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।’
তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) খান শরিফুল ইসলাম বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গঙ্গাচড়ার গঞ্জিপুর এলাকার চেয়ারম্যান মোড়ে বাস ও থ্রি-হুইলারের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান।