প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন সিলেট বিভাগের নতুন ৩ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী

বাঁ থেকে আব্দুস শহীদ, শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সামন্ত লাল সেন
ছবি: সংগৃহীত

‘আমি রীতিমতো নার্ভাস হয়ে গেছি শুনে। এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না।’ এভাবেই বুধবার রাত পৌনে ১০টার দিকে নিজের প্রতিক্রিয়া প্রথম আলোকে জানালেন নতুন মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট (সংসদ সদস্য নন) কোঠায় পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে ঠাঁই পাওয়া দেশের বিশিষ্ট বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জন সামন্ত লাল সেন।

সামন্ত লাল সেনসহ সিলেট বিভাগের মোট তিনজন সরকারের নতুন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন। এর আগের মন্ত্রিসভায় সিলেটের পাঁচজন ছিলেন। এর মধ্যে চারজন পূর্ণ মন্ত্রী এবং একজন প্রতিমন্ত্রী। এবার আগের মন্ত্রিসভার কেউ ঠাঁই পাননি। যাঁরা পেয়েছেন, সবাই এবারই প্রথমবারের মতো মন্ত্রী হলেন।

রাতে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম জানান। এর মধ্যে ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। তবে কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন, তা কাল বৃহস্পতিবার শপথের পর জানা যাবে।

পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে নতুন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুস শহীদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সংসদের একজন প্রবীণ সদস্য। আমি সাতবার নির্বাচিত হয়েছি। এটা আমার জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। অনেকেই বলেন, লাকি সেভেন। এটাও আমার একটা লাক, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’

আব্দুস শহীদ আরও বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন রাজনীতি করার কারণে মন্ত্রিসভার সদস্য হয়ে উপহার পেয়েছি। আমি সারা জীবন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছি। শত কষ্ট ও ত্যাগস্বীকার করেও আওয়ামী লীগের নীতি বাস্তবায়নে কাজ করেছি। তাই মনে করি, প্রধানমন্ত্রী যে দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের এই যে ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশে পৌঁছার রাস্তাকে আরও মসৃণ করে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা কাজ করব।’

আব্দুস শহীদের মন্ত্রী হওয়ার খবর জানার পর শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে আনন্দ মিছিল করেছেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা।

প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। নিশ্চয়ই দেশের কল্যাণে এবং এলাকার মানুষের ভালোর জন্য কাজ করব। আমি সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।’

মন্ত্রিসভার তালিকা ঘেঁটে দেখা গেছে, সিলেটের যে তিনজন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন, এঁদের মধ্যে সামন্ত লাল সেন ও শফিকুর রহমান চৌধুরীর বাড়ি সিলেট। এ ছাড়া আব্দুস শহীদের বাড়ি মৌলভীবাজার। এবার সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ থেকে কেউ মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাননি। তবে গত মন্ত্রিসভায় সিলেটের দুজন এবং সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের একজন করে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছিলেন।

আগের মন্ত্রিসভায় সিলেট-১ (নগর-সদর) আসনের সংসদ সদস্য এ কে আব্দুল মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সিলেট-৪ (কোম্পানীগঞ্জ-গোয়াইনঘাট-জৈন্তাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী, সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য এম এ মান্নান পরিকল্পনামন্ত্রী, মৌলভীবাজার-১ (জুড়ী-বড়লেখা) আসনের সংসদ সদস্য শাহাব উদ্দিন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী এবং হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব আলী বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নির্বাচন করে মাহবুব আলী ছাড়া সবাই আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।