মেহেরপুর জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের নবনিযুক্ত বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মোস্তাফিজুর রহমানের অপসারণের দাবিতে আদালত ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই সঙ্গে মেহেরপুর ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পদ থেকে তাঁর অপসারণের দাবি জানানো হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় আদালতের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিলে অনেকে ভোগান্তিতে পড়েন। বৈষম্যবিরোধীদের অভিযোগ, মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে মামলা আছে। তিনি পিপি হলে বিচারপ্রার্থীরা বৈষম্যের শিকার হবেন। দ্রুত তাঁকে অপসারণ করতে হবে।
মোস্তাফিজুর রহমান বাংলা ভিশনের জেলা প্রতিনিধি এবং মেহেরপুর আদালতের আইনজীবী। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এই আইনজীবীকে ১৯ নভেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটার কার্যালয় থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তার আগে ২২ অক্টোবর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কলেজ পরিদর্শক আব্দুল হাই সিদ্দীক সরকার স্বাক্ষরিত পত্রে মোস্তাফিজুরকে ছহিউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনোনীত করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মেহেরপুরের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, সাংবাদিক ও আইনজীবী মোস্তাফিজর রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক নারীঘটিত মামলা আছে। তিনি নারীদের দিয়ে ব্যবসায়ীদের ফাঁদে ফেলে চাঁদাবাজি করে আসছেন। আদালতে করা মামলার আসামি। তাঁর মতো ব্যক্তি যদি নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের কৌঁসুলি হন, তাহলে পীড়িত, বঞ্চিত মানুষেরা চরম বৈষম্যের শিকার হবেন।
অভিযোগের বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের সময় মেহেরপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন বিরাগভাজন হয়ে আদালত ও পুলিশকে কাজে লাগিয়ে ওই মামলায় তাঁকে ১০ নম্বর আসামি করেন। রাজনৈতিকভাবে তাঁকে হেয় করার উদ্দেশ্যে মামলাটি করা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ভুল বুঝে তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। সত্য ঘটনা জানলে তাঁরা আন্দোলন করতেন না।
গত বছরের ২২ নভেম্বর চাঁদাবাজি ও পর্নোগ্রাফির অভিযোগে সদর থানায় একটি মামলা করেন মেহেরপুরের এক এনজিও কর্মী। মামলায় গত ১১ এপ্রিল আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমানসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। অভিযোগপত্রে নারী চক্র দিয়ে মেহেরপুরের বিভিন্ন ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তাদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেল করে অর্থ হাতানোর অভিযোগ করা হয়। মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতা করার অভিযোগ করা হয়।