বিকাশে ভুল করে পাঠানো এক ব্যক্তির এক লাখ টাকা আজ বুধবার ফেরত দিলেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার পারভেজ তালুকদার (২৪) নামের এক শিক্ষার্থী। পারভেজ কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তিনি পাকুন্দিয়া পৌর সদরের সৈয়দ গাঁও পূর্ব পাড়ার মৃত মো. শাফি উদ্দিনের ছেলে।
এই সততায় মুগ্ধ টাকা ফেরত পাওয়া ব্যক্তি। এলাকাবাসীও পারভেজের এ সততার প্রশংসা করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পারভেজ বলেন, ‘টাকা পাওয়ার পর থেকে আমি অস্থির হয়ে যাই কখন তিনি টাকা সঠিক মালিকের কাছে ফেরত দেবেন। আসলে সততার কাছে টাকা মূল্যহীন। এক লাখ টাকা কেন, কোটি টাকা হলেও ফেরত দিতাম। কারণ, এ টাকার মালিক আমি নই। তাই এ টাকার প্রতি আমার কোনো অধিকারও নেই। তবে শেষ পর্যন্ত টাকা সঠিক মালিককে ফেরত দিতে পেরে এখন স্বস্তি ও মনে একধরনের প্রশান্তি পাচ্ছি।’
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় পারভেজের ব্যক্তিগত বিকাশ নম্বরে হঠাৎ চারটি নম্বর থেকে চলে আসে এক লাখ টাকা। টাকা পেয়ে অবাক পারভেজ রাতেই টাকা আসা এজেন্ট নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে আজ সকালে পাশের উপজেলার হোসেনপুর বাজারের বিকাশের এজেন্ট ফোন করে পারভেজকে জানান, বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে টাকাটি পাকুন্দিয়ার মুনিয়ারী কান্দাবাজারে পাঠাতে গিয়ে ভুলে তাঁর বিকাশ নম্বরে (পারভেজ) পাঠিয়েছেন। তিনি টাকাগুলো ফেরত দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তারপর সঠিক তথ্যপ্রমাণ দিয়ে আজ বিকেলে হোসেনপুর বাজারের ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া, পাকুন্দিয়া বাজারের ব্যবসায়ী মোনায়েম, স্থানীয় সামাজিক সংগঠন অনার্স অ্যান্ড মাস্টার্স ছাত্র কল্যাণ সংগঠনের উপদেষ্টা ইয়াসিন আরাফাত, সাধারণ সম্পাদক এনামুল হকের উপস্থিতিতে টাকার মালিক সৌদি আরবপ্রবাসী মো. কাওসারের বাবা আবদুস সালামের হাতে এক লাখ টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
আবদুস সালাম বলেন, ‘আজকাল মুঠোফোনে ভুলক্রমে ২০ টাকা রিচার্জ হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনুরোধ করেও সে টাকা ফেরত পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। সেখানে একজন ছাত্র এক লাখ টাকা ফেরত পাঠিয়ে সততার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমি তার প্রতি খুবই খুশি। সততা ও নীতিনৈতিকতায় পারভেজ নিজেকে একজন আদর্শবান মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে, সে দোয়া করি।’