সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের একটি সেতুতে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে আগামীকাল বুধবার থেকে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বাসের মালিক ও শ্রমিকেরা। গতকাল সোমবার সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বাস টার্মিনাল এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তাঁরা।
এর আগে একই দাবিতে ১৫ অক্টোবর মানববন্ধন করে ‘রিয়ার অ্যাডমিরাল এম এ খান সেতু’ নামের ওই স্থাপনার টোল আদায় বন্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ২০ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের লামাকাজি এলাকায় রিয়ার অ্যাডমিরাল এম এ খান সেতুর অবস্থান। ১৯৮৪ সালে ৭ কোটি ৬১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মিত হয়। আর ১৯৯০ সালের ৩ আগস্ট থেকে টোল আদায় শুরু হয়। সেই হিসাবে ৪০ বছর ধরে সেতুটিতে টোল আদায় করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই সেতু থেকে নির্মাণ ব্যয়ের কয়েক গুণ রাজস্ব আদায় হয়ে গেছে। এরপরও টোলমুক্ত হচ্ছে না সেতুটি। মূলত সড়ক বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা ও ইজারাদারদের ব্যবসা চালু রাখার জন্যই সেতুটিতে টোল আদায়প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। টোল আদায়ের নামে অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে গত ৫ আগস্টের পর সেতুটির টোল প্লাজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন ছাত্র-জনতা। এরপর গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে সেখানে আবার টোল আদায় শুরু করেছে সড়ক বিভাগ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ৩ বছর আগে প্রায় ১৪ কোটি টাকায় ইজারা হয়েছিল। এ বছর ১৩তম দরপত্র আহ্বানের পর ৯ কোটি ৮২ লাখ সর্বোচ্চ দর নির্ধারিত হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাস থেকে ইজারাবিহীন এ সেতুর টোল আদায় করছে সড়ক বিভাগ।
সেতুটির টোল আদায়কে ইজারাদার ও সড়ক বিভাগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবসা হিসেবে উল্লেখ করেছেন সুনামগঞ্জ জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ জুয়েল আহমেদ। তিনি জানান, ‘আমরা এই সেতুতে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। টোল আদায় বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে সব ধরনের পরিবহন বন্ধ থাকবে।’
এদিকে সিলেট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, এই সেতুর টোল আদায়ে সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা দেওয়া জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এখন তাঁদের নিজস্ব লোকজন টোল আদায় করছেন।