কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী কেয়ারি সিন্দাবাদ নামের একটি পর্যটকবাহী জাহাজকে চলাচলের অনুমতি দিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। আজ সোমবার কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারি সিন্দাবাদ জেলা প্রশাসকের কাছে শুধু চলাচলের জন্য আবেদন করেছিলেন। তাঁরা সেই জাহাজকে যাচাই–বাছাই শেষে কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে চলাচলের জন্য অনুমতি দিয়েছেন। তবে জাহাজটি কখন সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যাবে, সেটি চূড়ান্ত করবে মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি।
মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির আহ্বায়ক ও কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নীলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী জানান, আগামী বুধবার (২৭ নভেম্বর) তাঁরা কমিটির বৈঠক ডেকেছেন। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে, কোন জায়গা থেকে জাহাজ ছাড়বে। আপাতত কেয়ারি সিন্দাবাদ আবেদন করেছিল। তাঁরা সেই পর্যটক জাহাজকে অনুমতি দিয়েছেন।
কেয়ারি সিন্দাবাদ জাহাজের ব্যবস্থাপক মো. শাহ আলম বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন নৌরুটে চলাচলের জন্য অনুমোদন পাওয়া গেছে। তবে ২০০৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কেয়ারি সিন্দাবাদ জাহাজটি টেকনাফের দমদমিয়া জাহাজ ঘাট থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটক পরিবহন করছিল। মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি দিন-তারিখ ধার্য করলে পর্যটক পরিবহন শুরু করা হবে।
সূত্র জানায়, টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন, ইনানী-সেন্ট মার্টিন, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন ও চট্টগ্রাম-সেন্ট মার্টিন—এ চার নৌরুটে দিয়ে কয়েক বছর ধরে বিলাসবহুল ১২টি পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করছিল। এর মধ্যেই চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর (এএ) তুমুল যুদ্ধ চলমান রয়েছে। পাশাপাশি নাফ নদী দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতের সময় একাধিকবার বাংলাদেশি সার্ভিস ট্রলার ও স্পিডবোট লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণের ঘটনার কারণে নাফ নদী অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। ফলে এখন থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে চলাচলের সম্ভাবনা রয়েছে।
১৯ নভেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন নিয়ন্ত্রণে কমিটি গঠন এবং একই সঙ্গে কক্সবাজার থেকে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ চলাচল নিয়ে কিছু দিকনির্দেশনাও দেওয়া হয়। ছয় সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন টেকনাফ ও কক্সবাজার সদরের ইউএনও, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় অথবা ট্যুরিজম বোর্ডের কক্সবাজার প্রতিনিধি, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের কক্সবাজার প্রতিনিধি, কোস্টগার্ডের কক্সবাজার প্রতিনিধি, ট্যুরিস্ট পুলিশ-কক্সবাজারের প্রতিনিধি এবং পরিবেশ অধিদপ্তর-কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক।