রাজশাহীতে সিন্ডিকেট করে সরকারি খামারের গরু নিলাম, অনিয়ম তদন্তের আশ্বাস

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ীহাটে নিলামে বিক্রি হওয়া ৪০টি গরুর কয়েকটি
ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ীহাটে আঞ্চলিক দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারের ৪০টি গরু নিলামে ‘অনিয়মের’ বিষয়টি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নজরে এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের পরিচালক (উৎপাদন) এ বি এম খালেদুজ্জামান।

গতকাল মঙ্গলবার খামারে ওই নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। নিলামে অংশ নিতে প্রায় ৪০০ জন ব্যবসায়ী আবেদন জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু নিলামে অংশ নেন মাত্র চারজন। এরপরও সিন্ডিকেট করে চারজনের পক্ষে একজন শুধু দর হাঁকেন। তিনি ওই খামারের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী।

এ নিয়ে ‘নিলামে সরকারি খামারের গরু কিনতে প্রায় ৪০০ আবেদন, দর হাঁকেন মাত্র একজন’ শিরোনামে প্রথম আলো অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (উৎপাদন) এ বি এম খালেদুজ্জামান সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশিত সংবাদ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. এমদাদুল হক তালুকদারের নজরে এসেছে। তিনি নিজেই বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন। অনিয়ম হলে অবশ্যই বিষয়টি তদন্ত করা হবে।

গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ীহাটের আঞ্চলিক দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারে গতকাল ৪০টি গরু নিলামের নামে বিক্রি করা হয়। নিলামে অংশ নিতে ৪০০ জন ব্যবসায়ী আবেদন জমা দিলেও অংশ নেন মাত্র ৪ জন। তা-ও চারজনের পক্ষে একজন শুধু দর হাঁকেন। নিলামে কেনা একেকটি গরু সেখানেই পরে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, আবেদন জমা দিয়ে ব্যবসায়ীরা নিলামে অংশ না নিলে তাঁদের কিছু করার নেই।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে ছিলেন রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সালমান ফিরোজ ওরফে ফয়সাল। প্রকাশ্য নিলামে অংশ নেন কালু, বাবু, মেহেরাব ও বাদশা। বাদশা ওই প্রতিষ্ঠানের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। তিনিই সরকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন দামের চেয়ে মাত্র ২০০ টাকা করে বেশি দিয়ে অন্যদের পক্ষে দর হাঁকেন। বাদশা এক দুই তিন বলার সঙ্গে সঙ্গে নিলাম চূড়ান্ত করা হয়। আর কাউকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। সিন্ডিকেটের বাইরের একজন নিলামে ডাক দিলে তাঁকে তেড়ে বের করে দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের ভাষ্য, বেলা ১১টায় নিলাম কার্যক্রম শুরু করতে চান কর্মকর্তারা। তখন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সালমান ফিরোজ নিলামের আগে আরেকটু সময় চান। কর্মকর্তারা সময় দেন। এবার নিলামে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে আলাদা করে কথা বললেন সালমান ফিরোজ। তিনি ‘অনুমতি’ দেওয়ার পর কর্মকর্তারা নিলাম কার্যক্রম শুরু করেন।