রাজশাহী নগরের সিঅ্যান্ডবি মোড়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তরের পাশে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের মুখে কালি মাখিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সেই সঙ্গে ম্যুরালের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ম্যুরালটির সারা গায়ে শাবল ও হাতুড়ির আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। ম্যুরালে মুখমণ্ডলে কালি মাখানো। নিচের দিকে বেদি ভেঙে ফেলা হয়েছে। দুই পাশে থাকা সীমানাপ্রাচীরের কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। বেশ কিছু শিক্ষার্থী পুরো এলাকা পরিষ্কার করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙার খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলেন ‘সেভ রাজশাহী’ নামের সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকেরা। তাঁরা ম্যুরালটি রক্ষার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
সিঅ্যান্ডবি মোড়ের বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি নির্মাণ শেষে ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ-ভারত পঞ্চম সাংস্কৃতিক মিলনমেলার প্রথম দিনে উদ্বোধন করা হয়। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৫ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি নির্মিত হয়। এটি দেশের সবচেয়ে বড় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল বলে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটির উচ্চতা ৫৮ ফুট। ম্যুরালের মূল অংশে বঙ্গবন্ধুর ছবির উচ্চতা ৫০ ফুট ও দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট। এটির ফাউন্ডেশনে ২২টি পাইলিং করা হয়েছে। সীমানাপ্রাচীরের দুই ধারে ৭০০ বর্গফুট টেরাকাটার কাজ করা হয়েছে। একাধারে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের লোকজ সংস্কৃতির নানা চিত্র ফুটিয়ে তোলা। ম্যুরালে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরা।
এদিকে রাজশাহী কলেজের পাশে থাকা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি গত সোমবার বিকেলেই বুলডোজার এনে ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছে। এর দুই পাশের পিলার ভাঙা হয়েছে। পুরো ম্যুরালে আঘাতের চিহ্ন আছে। নগরের কুমারপাড়ায় জাতীয় চার নেতার মাঝখানে ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় গত সোমবার। মাঝখান থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি তুলে ফেলা হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।