বাগেরহাটে আবদুল হাইয়ের বিশাল বাড়িতে তালা ঝুলছে

বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার আড়ুয়াঢিহি গ্রামে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই ওরফে বাচ্চুর বাড়ি এটি
ছবি: প্রথম আলো

বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার আড়ুয়াঢিহি গ্রামে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই ওরফে বাচ্চুর বিশাল বাড়িতে তালা ঝুলে। প্রতিবেশীরা জানালেন, বাড়িটি ফাঁকাই পড়ে থাকে। সেখানে কেউ থাকেন না। বছরখানেক আগে এই বাড়িতে এসেছিলেন আবদুল হাই। মাঝমধ্যে তাঁর ছোট ভাই এলেও রাতে এখানে থাকেন না।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শেখ আবদুল হাইয়ের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। দুতলা বাড়িটি মোল্লাহাট ও পাশের চিতলমারী উপজেলার অধিকাংশ মানুষ এক নামে চেনেন। বাড়ির প্রধান ফটকের পশ্চিম পাশে লেখা ‘শেখ হামিদ ও ছাবেদা ভিলা’। তাঁরা দুজন আবদুল হাইয়ের বাবা-মা। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। এলাকার মানুষের কাছে তিনি বাচ্চু সাহেব নামে পরিচিত।

এলাকার বিভিন্ন বয়সী অন্তত ২৫ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেখ আবদুল হাইয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যে অভিযোগপত্র দিয়েছেন, তা তাঁদের বেশির ভাগই জানেন না। এলাকার বহু মানুষকে তিনি বেসিক ব্যাংকে চাকরি দিয়েছেন বলে তাঁরা জানালেন। তাঁরা মনে করেন, তিনি সরকারি দলের কাছের লোক। মামলা হোক আর যাই হোক, তাঁর কিছু হবে না।

গ্রামের পশ্চিম পাড়ার কৃষক তরিকুল ইসলাম বলেন, তাঁর এক চাচাত ভাই আবদুল হাইয়ের কল্যাণে বেসিক ব্যাংকে চাকরি পেয়েছেন। তিনি এলাকায় এলে তো মানুষের লাইন পড়ে যেত!

একই পাড়ার তরুণ মোহাম্মদ বাপ্পি মোল্লা বলেন, ‘বাচ্চু সাহেব তো এলাকায় তেমন আসেন না। তাঁর ছোট ভাই আসেন। তবে শুনেছি, এখন নাকি তিনি (শেখ আবদুল হাই) একটু বিপদে পড়েছেন।’

এলাকার লোকজন বলেন, এই বাড়ির কেয়ারটেকার জাবের আলী শেখ। তিনি আবদুল হাইয়ের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে। গতকাল রাত আটটার দিকে তাঁর বাড়িতে গিয়ে কথা বলা শুরু করলে সংবাদকর্মী পরিচয় পেয়ে তিনি বলেন, তিনি কানে শুনতে পান না। তিনি যে বাড়ির কেয়ারটেকার, সেটাও অস্বীকার করেন। একপর্যায়ে তাঁর স্ত্রী এসে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দূরের আত্মীয়। এখানে তাঁদের কেউ থাকেন না। শুনছি মাঝেমধ্যে আসেন। আমার স্বামী ছোটবেলায় ঢাকায় ওনাদের ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন।’

শেখ আবদুল হাইয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কথা বলতে রাজি হননি।

শেখ আবদুল হাই ওরফে বাচ্চুর বিষয়ে জানতে চাইলে সবাই বলছিলেন তাঁর ভাগনে গোলাম মাওলা সবকিছু জানেন। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি বেসিক ব্যাংকে চাকরি করেন। আবদুল হাই দেশে নেই। বিদেশে ছিলেন বলে তিনি জানতেন। দেশে ফিরেছেন, এমন কোনো খবর তাঁর কাছে নেই।