পাবনার ঈশ্বরদীতে গৃহবধূকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা সদরের রেলগেট এলাকায়
পাবনার ঈশ্বরদীতে গৃহবধূকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা সদরের রেলগেট এলাকায়

যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ, পলাতক স্বামীকে গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি

পাবনার ঈশ্বরদীতে যৌতুক না পেয়ে সুমাইয়া খাতুন (২১) নামের এক গৃহবধূকে তাঁর স্বামী হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা সদরের রেলগেট এলাকায় নিহত নারীর স্বজন ও প্রতিবেশীরা মানববন্ধন করেছেন। এ সময় তাঁরা অভিযুক্ত ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

সুমাইয়া খাতুন উপজেলার পূর্ব টেংরি কদমতলা গ্রামের মাহমুদ আকাশ খানের স্ত্রী। গত সোমবার দুপুরে নিজ বাড়ি থেকে সুমাইয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। সুমাইয়ার বাবার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, সুমাইয়াকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেছেন মাহমুদ।

লাশ উদ্ধারের পর সুমাইয়ার স্বজন ও প্রতিবেশীরা প্রতিবাদ করছিলেন। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা গ্রাম থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা সদরের রেলগেট এলাকায় উপস্থিত হন। এরপর সেখানে দীর্ঘ মানববন্ধন তৈরি করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে সুমাইয়া হত্যার বিচার দাবি জানানো হয়।

সুমাইয়ার স্বজনেরা জানান, সুমাইয়া ও মাহমুদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০২২ সালের ১১ নভেম্বর পরিবারের অসম্মতিতে তাঁরা বিয়ে করেন। ছয় মাস পর সুমাইয়ার পরিবার বিষয়টি মেনে নেন। এর পর থেকেই মাহমুদ যৌতুকের জন্য সুমাইয়াকে চাপ দিতে থাকেন। একপর্যায়ে সুমাইয়া বাবার বাড়ি থেকে স্বামীকে ১ লাখ টাকা এনে দেন। সম্প্রতি আবার তিনি ১ লাখ টাকা দাবি করতে থাকেন। টাকা না দেওয়ায় তাঁর ওপর নির্যাতন শুরু হয়। সুমাইয়া তখন বাবার বাড়িতে চলে আসেন। গত শনিবার দুই পরিবারের সমঝোতায় সুমাইয়া আবার স্বামীর বাড়িতে ফিরে যান। গত সোমবার দুপুরে সেখান থেকে তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

সুমাইয়ার বাবা আরমান মণ্ডল জানান, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি প্রতিবেশীদের মাধ্যমে জানতে পারেন তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে তিনি ছুটে গিয়ে মেয়েকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পান। মেয়েকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরমান মণ্ডলের অভিযোগ, যৌতুকের টাকা না পেয়ে তাঁর মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।
এ প্রসঙ্গে জানতে অভিযুক্ত মাহমুদ আকাশ খানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁর মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।

ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক তদন্ত মনিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদন পেলে হত্যা নাকি আত্মহত্যা, তা পরিষ্কার হওয়া যাবে। ঘটনার পর থেকে মেয়েটির স্বামী পলাতক। মেয়েটির বাবা হত্যার অভিযোগ তুলেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।