চুয়াডাঙ্গায় টানা তৃতীয় দিনের মতো মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। কুয়াশা ও শীত উপেক্ষা করে কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে। হাড়কাঁপানো শীতে বিপাকে পড়েছেন হতদরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষ।
চুয়াডাঙ্গার পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার আজ রোববার সকাল ৯টায় জানায়, চুয়াডাঙ্গা জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ৮০ শতাংশ।
আজ সকালে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার দাসপাড়ায় শীতার্ত বিভিন্ন বয়সী নারী ও পুরুষকে তীব৶ শীত থেকে রক্ষা পেতে বাড়ির বাইরে, রাস্তায় ও খোলা জায়গায় রোদ পোহাতে দেখা গেছে। মাথাভাঙ্গা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বেশির ভাগ মানুষের আদি পেশা জুতা, স্যান্ডেল, বাঁশ-বেতের তৈজসপত্র তৈরি ও সেলুনের কাজ। অনেকে আদি পেশা ছাড়লেও অভাব পিছু ছাড়েনি। ছেঁড়া ও পুরোনো চাদর গায়ে রাস্তায় বসে রোদ পোহাচ্ছিলেন ৭৬ বছর বয়সী নারী রেণু বালা। তিনি বলেন, ‘খুপ শীত লাগে। বাড়িত খ্যাতা-কাপুড় নেই, শীতির ঠ্যালায় ঘুম আসে না। রোইদ পুয়াইনের জন্নি এইকেনে বসে।’
রেণু বালাসহ মাথাভাঙ্গা নদীর পাড়ের মানুষ তীব্র শীতে নিজেরা যেমন কষ্ট ভোগ করেছেন, তাঁদের বাড়ির গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগিও কষ্টের মধ্যে আছে। স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন দাস বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাঁস-মুরগি ও গরু-ছাগলের নানা রকম রোগবালাই দেখা দিয়েছে। শীতের কারণে অসুস্থ পশুপাখি নিয়ে সরকারি পশু হাসপাতালে গেলে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাভাবে বাইরে থেকেও ওষুধ কিনতে না পারায় গবাদিপশু-পাখি নিয়ে কষ্টে আছেন।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটির জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আগামীকাল সোমবারও শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ১৭ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা বাড়বে, তবে আকাশ মেঘলা থাকবে। ২১ ডিসেম্বর বৃষ্টির সম্ভবনা আছে।
গত মৌসুমের তুলনায় এবার অন্তত এক মাস আগে থেকে জেলায় মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলেও সরকারিভাবে জেলায় এখন পর্যন্ত শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়নি। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ১০ হাজার শীতবস্ত্রের পাশাপাশি ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে জেলার চারটি উপজেলায় কম্বল কেনার জন্য নগদ ১২ লাখ টাকা সহায়তা পাওয়া গেছে। দুটি উপজেলায় কম্বল কেনা শেষ হয়েছে, বাকি দুটি উপজেলার জন্য আজ শীতবস্ত্র কেনা হবে। সোমবার থেকে শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।