সুনামগঞ্জ জেলার মানচিত্র
সুনামগঞ্জ জেলার মানচিত্র

সুনামগঞ্জে পরাজিত প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় পদক্ষেপ নিতে ডিআইজিকে ইসির নির্দেশ

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পুলিশের সিলেট রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শাহ মিজান শাফিউর রহমানকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

৭ জুন শুক্রবার বিকেলে মধ্যনগর উপজেলার দাতিয়াপাড়া গ্রামে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইদুর রহমান ও তাঁর ছেলে আরিফুর রহমানসহ সাতজন আহত হন। এ ঘটনায় ১০ জুন (সোমবার) এ বিষয়ে কমিশনে অভিযোগ দেন সাইদুর রহমানের ছেলে মাসুকুর রহমান।

এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজিকে নির্বাচন কমিশন থেকে চিঠি দেওয়া হয়। ১০ জুন ইসির উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে ডিআইজিকে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনগত পদক্ষেপ নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে বলা হয়। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য ডিআইজি শাহ মিজান শাফিউর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন ধরেননি।

৫ জুন অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে রাজ্জাক ভূঁইয়া ১২ হাজার ৮৫৩ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সাইদুর রহমান পান ৯ হাজার ৯১৬ ভোট। দুজনের বাড়ি একই গ্রামে। এই দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে নানা বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে।

নির্বাচনের পর ৭ জুন আবদুর রাজ্জাক ভূঁইয়ার ভাতিজা আজিম মাহমুদের নেতৃত্বে হামলা হয় বলে অভিযোগ। আবদুর রাজ্জাক ভূঁইয়া পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিচালক আবদুল বাতেনের বড় ভাই। আজিম মাহমুদ আপন ভাতিজা। এ ঘটনায় উল্টো পরদিন মধ্যনগর থানায় আজিম মাহমুদ বাদী হয়ে সাইদুর রহমানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ঘটনার প্রতিবাদে রোববার সুনামগঞ্জে মানববন্ধন করেন আইনজীবীরা। এই মানববন্ধন থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তোলা হয়।

এদিকে হামলার শিকার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাইদুর রহমানসহ ১৭ জনের নামে করা মামলার আসামিদের মধ্যে বুধবার হাইকোর্ট থেকে পাঁচজন ছয় সপ্তাহের জন্য জামিন পেয়েছেন। এ সময়ে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার বা হয়রানি করতে পারবে না বলে আদেশ দেওয়া হয়েছে। একই মামলার আরও পাঁচজন আসামি বুধবার জামিন নিয়েছেন সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা আমলি আদালত থেকে। সাইদুর রহমানের আইনজীবী মোহাম্মদ দাউদ খান জুবায়ের হাইকোর্টের জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাইদুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনের আগে তাঁর পক্ষ থেকে পুলিশের ডিআইজি আবদুল বাতেনের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়। ভোটের আগের দিন মধ্যনগর থানা–পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগও দেন তাঁরা। এতে করে আবদুর রাজ্জাকের পরিবার ক্ষুব্ধ। এর জেরেই হামলা হয়েছে। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।