জামালপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এ কারণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জেলার অনেক এলাকা থেকে পানি সরে গেলেও নিচু এলাকায় বাড়িঘর ও রাস্তা এখনো জলমগ্ন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জামালপুর কার্যালয়ের পানি পরিমাপক আবদুল মান্নান আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনার পানি ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে খুব ধীরে পানি বাড়ছে। আরও দুই থেকে তিন দিন পানি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে ভয়াবহ কিছু হওয়ার আশঙ্কা নেই। দুর্গত এলাকা জলমগ্ন থাকলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গত ২ আগস্ট থেকে যমুনার পানি বেড়ে যাওয়ায় জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত কয়েক দিন থেকে পানি কমতে শুরু করে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, অনেকের ঘরবাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও নিম্নাঞ্চলের ঘরে ঘরে এখনো পানি আছে। এর মধ্যেই আবার পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন বানভাসি মানুষ। বহু মানুষ এখনো বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, সড়কের পাশে ও সেতুর ওপর আশ্রয় নিয়ে আছেন। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্যসংকট। মানুষের কাজ নেই। হাতে টাকা নেই। সব মিলিয়ে দিশাহারা বন্যার্ত মানুষ।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার বকশীগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ, মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার ৪০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ২ লাখ ৫০ হাজার ২২৮ জন এই বন্যায় সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্লাবিত হয়েছে রাস্তাঘাট, হাটবাজার, ফসলি জমি, মৎস্য খামার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্যার পানিতে ডুবে তিন শিশুসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।