প্রবারণা উৎসবের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ফানুস ওড়ানো
প্রবারণা উৎসবের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ  ফানুস ওড়ানো

শুভ প্রবারণা উৎসব চলছে, মেতেছেন রাখাইনরা

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় রাখাইন সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শুভ প্রবারণা উৎসব শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এ উৎসব আগামী তিন দিন পর্যন্ত চলবে।

প্রবারণা উৎসবের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে ফানুস ওড়ানো। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত হতেই কুয়াকাটা সৈকতের বালুচর থেকে ওড়ানো হয় ফানুস। রাখাইন তরুণ-তরুণীরা হইহুল্লোড় করে একের পর এক ফানুস ওড়াতে থাকেন। কুয়াকাটায় আসা পর্যটকেরাও ফানুস ওড়ানোর মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করেন।

প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে কুয়াকাটার কেরানীপাড়াসহ পাশের কালাচান পাড়া, গোড়া আমখোলা পাড়া, নাইওরিপাড়া, বৌলতলী পাড়া ও মিস্ত্রি পাড়ায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পাড়ার বাসিন্দারাও ছিলেন উচ্ছ্বসিত। রাখাইনদের এমন আয়োজনে মুসলমান ও হিন্দুধর্মের মানুষেরাও শামিল হয়েছেন।

রাখাইন পাড়াগুলোতে প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে পায়েস, বিন্নি, পাটিসাপটা, কুলি ও নানা রকম বাহারি পিঠা তৈরি করা হয়। অতিথিদের এসব খাবার দিয়ে আপ্যায়িত করা হয়। প্রতিবছরের মতো এ উৎসবকে কেন্দ্র করে রাখাইনদের বিভিন্ন পাড়াসহ বৌদ্ধবিহারগুলো সাজানো হয়েছে। এদিকে কলাপাড়া পৌর শহরের কেন্দ্রীয় বৌদ্ধমন্দিরসহ নাচনাপাড়া, চৈয়াপাড়া, পখিয়াপাড়ায় রাখাইনরা বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রবারণা উৎসব পালন করছেন।

মিস্ত্রি পাড়ার পুরোহিত উত্তম ভিক্ষু বলেন, বৌদ্ধধর্ম অনুযায়ী, আষাঢ়ে পূর্ণিমাতে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাব্রত শুরু হয়ে এ পূর্ণিমাতে শেষ হয়। কার্তিকের এ পূর্ণিমার তিথিতে রাখাইন সম্প্রদায় প্রবারণা উৎসব পালন করে। এ সময় বৌদ্ধবিহারগুলোতে তিন দিন ধরে গৌতম বুদ্ধের স্মরণে বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়। রাখাইনরা অভিলাষ পূরণ, ধ্যান শিক্ষা ও কর্মসম্পাদনের লক্ষ্যে প্রতিদিন সকালে পরিষ্কার পোশাকে বিভিন্ন বিহারে গমন করেন।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এটি রাখাইনদের উৎসব হলেও বর্তমানে সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে প্রতিটি পাড়ায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।