ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান ওমরের (বীর উত্তম) অনুসারী কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে কাঁঠালিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শাহজাহান ওমরের নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা এ ঘোষণা দেন। তবে বিএনপির নেতারা বলছেন, যাঁরা আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁরা দলের পদধারী কেউ নন। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে দলে নিষ্ক্রিয় ছিলেন।
আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা দেওয়া নেতা-কর্মীদের মধ্যে কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপির একাংশের সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াছ মিয়া ও মোস্তাফিজুর রহমান, যুবদলের সহসভাপতি তরিকুল ইসলাম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হাসিব ভুট্টো ও সদস্যসচিব জাকির হোসেন উল্লেখযোগ্য। তাঁদের নেতৃত্বে উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন বলে তাঁরা দাবি করেন। এ সময় শাহজাহান ওমরের সমাবেশে গতকাল বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে থাকা আবদুল জলিল মিয়াজীকেও দেখা যায়।
জানতে চাইলে ইলিয়াছ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা স্বেচ্ছায় শাহজাহান ওমরের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছি। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা অবগত আছেন।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল বাশার ওরফে বাদশা বলেন, ‘আমরা শুনেছি বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগ করেছেন। তবে কী পরিমাণ পদত্যাগ করেছেন আমাদের জানা নেই। বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানকারীদের জন্য আমাদের দরজা খোলা আছে।’
দপ্তরের দায়িত্বে থাকা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কাঁঠালিয়ায় আজ যাঁরা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা দলের পদধারী কেউ নন। দলে তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। বিশেষ করে সেখানে যুবদলের কোনো কমিটি নেই। সম্প্রতি সেখানে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে।
এদিকে শাহজাহান ওমরের সঙ্গে অবস্থান নেওয়ায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রাজাপুর উপজেলা বিএনপির দুই নেতাকে বহিষ্কার করেছে জেলা বিএনপি। তাঁরা হলেন উপজেলা বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হেমায়েত হোসেন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মো. সামছুল আলম। তাঁরা দুজনই শাহজাহান ওমরের ঘনিষ্ঠ বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসিম আকন বলেন, এখনো রাজাপুরের অধিকাংশ দায়িত্বশীল নেতা বিএনপির সঙ্গে আছেন। যাঁরা শাহজাহান ওমরের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা দলে অনেক দিন ধরে নিষ্ক্রিয়।
এদিকে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে অস্ত্র নিয়ে সমাবেশ করার ঘটনায় নৌকার প্রার্থী শাহজাহান ওমর নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিয়েছেন। ঝালকাঠি-১ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির প্রধান ও সিনিয়র সহকারী জজ পল্লবেশ কুমার কুণ্ডু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। শাহজাহান ওমর আত্মপক্ষ সমর্থন করে জানিয়েছেন, অস্ত্রটি তাঁর নিবন্ধন করা বৈধ অস্ত্র। নিরাপত্তার স্বার্থে সমাবেশে সেটি জলিল মিয়াজীর হাতে ছিল।