সিলেটে স্থানে স্থানে বিএনপির পিকেটিং, সড়ক অবরোধ, টায়ারে অগ্নিসংযোগ, আটক ৭

বিএনপির ডাকা হরতাল চলাকাালে পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হরতাল সমর্থকেরা। আজ সকালে সিলেটের বন্দরবাজার এলাকায়
ছবি: আনিস মাহমুদ

বিএনপির ডাকা সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সিলেটে অনেকটা উত্তাপ ছড়িয়েছে। স্থানে স্থানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ‘অতর্কিত’ পিকেটিং চলছে। দুপুর ১২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তা চলছিল। এ ছাড়া হরতালের কারণে যানবাহন ছিল কম। ফলে জরুরি কাজে বাইরে বেরোনো লোকদের সমস্যায় পড়তে হয়।

পিকেটিং করার পাশপাশি জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অভিযোগে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সাতজন নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. ইলিয়াছ শরীফ প্রথম আলোকে বলেন, কর্মসূচি পালন তাদের (বিএনপি) রাজনৈতিক অধিকার। শান্তিপূর্ণভাবে সেটা পালন করলে সমস্যা নেই। কিন্তু জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করলেই পুলিশ তা রোধ করতে ব্যবস্থা নিচ্ছে। মহানগরের একাধিক স্থানে পিকেটাররা এমন কাজ করায় পুলিশ তাঁদের সরাতে ব্যবস্থা নিয়েছে।

নগরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান দেখা গেছে। সকাল আটটার পর থেকে নগরের অন্তত দুটি স্থানে পিকেটারদের সরাতে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। সকাল ১০টার দিকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের লালাবাজার এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা গাছ ফেলে অবরোধ তৈরি করেন। এ সময় তাঁরা টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করেন। একই সময়ে মহাসড়কের তেতলি এলাকায় পিকেটারেরা টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এ ছাড়া সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দক্ষিণ সুরমার হুমায়ূন রশীদ চত্বর এলাকায় জাফলংমুখী একটি যাত্রীবাহী বাসও ভাঙচুর করেন পিকেটাররা।

এর আগে সকাল আটটার দিকে জিন্দাবাজার এলাকায় পিকেটিং করতে বিএনপির প্রায় অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী জড়ো হলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা ইটপাটকেল ছুড়লে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সকাল পৌনে ১০টার দিকে জিন্দাবাজার এলাকায় পিকেটারদের সঙ্গে পুলিশের আবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এ সময় বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন বলে দলটির সূত্রে জানা গেছে।

সকাল সোয়া ৯টার দিকে জেলরোড পয়েন্টে বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী অতর্কিতভাবে মিছিল নিয়ে এসে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে তাঁরা পিকেটিং শুরু করলে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সকালে নগরের জিন্দাবাজার ও দরগাগেট এলাকায় কয়েকজন সাংবাদিকের মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করেছে পিকেটাররা। বেলা ১১টার দিকে নগরের মীরাবাজার এলাকায় কয়েকজন পিকেটার আধা ঘণ্টা পিকেটিং করেন। এ সময় তাঁরা দুটি লেগুনা গাড়ি ভাঙচুর করেন।

সকাল ৯টার দিকে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের লন্ডনি রোড এলাকায় ৩০ থেকে ৩৫টি মোটরসাইকেলে করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বের হয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ অন্তত ১০ থেকে ১২টি গাড়ি লাঠি দিয়ে ভাঙচুর করেছেন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভাঙচুর চালিয়ে পিকেটাররা দ্রুত সরে পরেন।

যোগাযোগ করলে সিলেটে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে সিলেটের মানুষ হরতাল পালন করছেন। অথচ পুলিশ বিনা উসকানিতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের কর্মসূচি পালনে বাধা দিচ্ছে।