লোহাগড়ার সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যান হত্যা মামলার আসামি পক্ষের সংবাদ সম্মেলন। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নড়াইল ও গোপালগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী শংকরপাশা এলাকায়
লোহাগড়ার সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যান হত্যা মামলার আসামি পক্ষের সংবাদ সম্মেলন। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নড়াইল ও গোপালগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী শংকরপাশা এলাকায়

নড়াইলে হত্যাকাণ্ডের জেরে অর্ধশতাধিক পরিবারকে বাড়িছাড়া করার অভিযোগ

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক এক চেয়ারম্যানকে হত্যাকাণ্ডের জেরে আসামি পক্ষের অর্ধশতাধিক পরিবারকে বাড়িছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নড়াইল ও গোপালগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী শংকরপাশা এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে হত্যা মামলার আসামি আকবর হোসেন (লিপন) এ অভিযোগ করেন।

গত ১০ মে সন্ধ্যায় লোহাগড়ার মল্লিকপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল শিকদারকে (৪৩) গুলি করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি মারা যান। ঘটনার পর মোস্তফার ভাই রেজাউল শিকদার বাদী হয়ে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। ওই মামলার আসামি সাবেক ইউপি সদস্য আকবর হোসেন।

আকবর হোসেনের অভিযোগ, বাদী পক্ষের হুমকিতে দেড় মাস ধরে আসামি পক্ষের অর্ধশতাধিক পরিবারের তিন শতাধিক ব্যক্তি এখনো বাড়িছাড়া। তবে মামলার বাদী রেজাউল শিকদার এই অভিযোগকে ‘মনগড়া’ বলে দাবি করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, এমন কোনো অভিযোগ তারা পায়নি। কারও বাড়িতে উঠতে বাধা নেই।

সংবাদ সম্মেলনে আকবর হোসেন বলেন, ১০ মে রাতে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের গুলিতে খুন হন মোস্তফা কামাল। ঘটনার পর মোস্তফার পক্ষের লোকজন তাঁদের ৬০টি বাড়িতে ভাঙচুর করে গবাদিপশুসহ বাড়ির মালামাল লুট করে নিয়ে যান। এ ঘটনায় ৩০ জনের নামে থানায় মামলা করা হয়। মামলার ২৩ জন আসামি জামিনে আছেন। কিন্তু বাদী পক্ষের ভয়ে জামিনে থাকা আসামিসহ তাঁদের লোকজন নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছেন না।

আকবর হোসেন দাবি করেন, ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁরা বিন্দুমাত্র জড়িত নন। গ্রাম্য দলাদলির কারণে তাঁদের আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে বাদীপক্ষের লোকজন তাঁদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে যাচ্ছেন। হামলার ভয়ে লোকজন বাড়িঘর ফেলে দুই মাস ধরে অন্যত্র বসবাস করছেন। গত ঈদের দিন সন্তানদের মুখে তাঁরা এক টুকরা মাংস তুলে দিতে পারেননি। তাঁরা হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে মিথ্যা অভিযোগ থেকে তাঁদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হত্যা মামলার বাদী রেজাউল শিকদার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের এসব অভিযোগ মনগড়া। এর কোনো সত্যতা নেই। আসামি পক্ষের লোকজনের গ্রামে আসার বিষয়ে তাঁরা কোনো বাধা সৃষ্টি করেননি।

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, ‘এমন কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে নেই। তাঁদের বাড়িতে উঠতে কোনো বাধা নেই। কেউ বাধা দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’