সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌরসভার মেয়র সাজ্জাদুল হকের ওপর হামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে পৌর চালা এলাকায় আলহাজ সিদ্দিক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মেয়র, তাঁর দুই বছরের সন্তানসহ চারজন আহত হয়েছেন। মেয়রের অভিযোগ, স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল মোমিন মণ্ডলের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) সেলিম সরকারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তাঁর ওপর এ হামলা চালান।
হামলায় আহত অপর দুজন হলেন বেলকুচির পৌর চালা এলাকার নাবিল মণ্ডল (৩৫) ও মোস্তাফিজুর রহমান (৪০)। তাঁদের বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ হামলার ঘটনার ছবি তুলতে গেলে মানবজমিন পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি আবু মুসাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। তাঁর মুঠোফোনটিও ছিনিয়ে নেন হামলাকারীরা।
আহত ব্যক্তি ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় আলহাজ সিদ্দিক উচ্চবিদ্যালয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের নিরীক্ষক দল আসে। বেলকুচির মেয়র সাজ্জাদুল হক ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। তাই নিরীক্ষার সময় তিনি সেখানে যান। এ সময় তাঁর কোলে তাঁর দুই বছরের সন্তান অস্তিত্ব হকও ছিল। বেলা দুইটার দিকে বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে তিনি রওনা দেন। এ সময় সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মোমিন মণ্ডলের পিএস সেলিম সরকারের নেতৃত্বে একদল লোক বিদ্যালয়ের মাঠের মধ্যেই মেয়রের পথ রোধ করেন ও তাঁর ওপর হামলা চালান। এ সময় মেয়র দ্রুত তাঁর সন্তানকে কোলে নিয়ে মোটরসাইকেল থেকে নেমে মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে যান। পাশ থেকে মেয়রের দুই অনুসারী ঠেকাতে এলে তাঁদের লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন হামলাকারীরা। খবর পেয়ে মাত্র ৩০০ মিটার দূরের বেলকুচি থানা থেকে পুলিশ এলে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যান।
মেয়র সাজ্জাদুল হক বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে সংসদ সদস্য আবদুল মোমিন মণ্ডলের অনুসারী বেলকুচি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাফিজুল ইসলাম, ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জুলফিকার আলী, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী ও পিএস সেলিম সরকার তাঁকে নানাভাবে ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন। আজ বেলা দুইটার দিকে তিনি বিদ্যালয় থেকে বাড়িতে আসার সময় পিএস সেলিম সরকার পিস্তল বের করে তাঁর পথ রোধ করেন। এরপর হাফিজুল ইসলাম, জুলফিকার আলী, ইউসুফ আলী তাঁকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করেন।
অভিযোগের বিষয়ে সেলিম সরকার বলেন, সাত মাস আগে ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচন হয়ে মেয়র পুনরায় সভাপতি হয়েছেন, এ বিষয়টি বেশির ভাগ অভিভাবক জানেন না। এ নিয়ে কিছু অভিভাবক শিক্ষা বোর্ডের নিরীক্ষক দলকে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। তাঁরা এ অভিযোগের বিষয়টি লিখিতভাবে জমা দিতে বলেছেন। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মেয়রের লোকজনের একটু কথা-কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে হাতাহাতিও হয়েছে। খবর পেয়ে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। আর কিছুই হয়নি।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে যাঁরাই জড়িত থাকুন, তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।