নরসিংদীর পলাশে অবস্থিত ঘোড়াশাল পলাশ ফার্টিলাইজার পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে (জিপিএফপিএলসি) কর্মরত ৭১ জন অস্থায়ী শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে কারখানাটির প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে ছাঁটাইয়ের শিকার শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এই মানববন্ধন করেন। এর আগে তাঁরা ব্যানার নিয়ে আশপাশের সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকেরা বলছেন, ঘোড়াশাল সার কারখানা ও পলাশ সার কারখানা একীভূত হওয়ার পর নতুন নামকরণ করা হয় ঘোড়াশাল-পলাশ ফার্টিলাইজার পিএলসি। তাঁদের যে ৭১ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে, তাঁরা ওই দুই সার কারখানার অস্থায়ী শ্রমিক ছিলেন। কারখানা দুটি একীভূত হওয়ার পর যেখানে তাঁদের স্থায়ী করার কথা, সেখানে গত ২ মার্চ আগে থেকে কোনো নোটিশ না দিয়ে তাঁদের ছাঁটাই করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়েই এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শ্রমিকেরা।
এই মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ঘোড়াশাল-পলাশ আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সভাপতি আমিনুল হক ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার চংদার। এ ছাড়া ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের মধ্যে বক্তব্য দেন মো. সুরুজ মিয়া, মো. হারুনুর রশিদ ও মো. নাজমুল হোসেন নামের তিনজন।
এ সময় বক্তারা বলেন, দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করে আসা ৭১ জন শ্রমিককে কারখানা কর্তৃপক্ষ আগে থেকে কোনো প্রকার নোটিশ না দিয়েই ২ মার্চ অবৈধভাবে ছাঁটাই করেছে। তাঁরা ৩০-৩৫ বছর ধরে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করে আসছিলেন। নিয়মবহির্ভূতভাবে তাঁদের চাকরিচ্যুত করায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। ফলে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচসহ সাংসারিক খরচ কীভাবে জোগাবেন, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছেন শ্রমিকেরা। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ছাঁটাইয়ের নোটিশ বাতিল করে এই ৭১ জন শ্রমিককে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানানো হয় মানববন্ধনে। দাবি আদায় না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন বক্তারা।
ঘোড়াশাল-পলাশ আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সভাপতি আমিনুল হক ভূঁইয়া বলেন, কথা ছিল দুই সার কারখানার আড়াই শতাধিক অস্থায়ী শ্রমিককে নতুন কারখানায় উৎপাদনে যাওয়ার সময় স্থায়ী করে নেওয়া হবে। তাঁদের মধ্যে ৭১ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে বাকি শ্রমিকদেরও অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ছাঁটাই হওয়া ৭১ জন শ্রমিকের সঙ্গে জুলুম করা হয়েছে। এটি কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনা ছাড়া কিছুই নয়।
এ বিষয়ে জানতে ঘোড়াশাল-পলাশ ফার্টিলাইজার পিএলসির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) তাজুল ইসলামের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি।