সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে নাগরপুরে আ.লীগের সমাবেশ, অনুপস্থিত সভাপতি–সম্পাদক

টাঙ্গাইল জেলার মানচিত্র
টাঙ্গাইল জেলার মানচিত্র

কৃষিমন্ত্রী, জেলার সব সংসদ সদস্য এবং জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে নিজ নির্বাচনী এলাকা টাঙ্গাইলের নাগরপুরে বড় জনসমাবেশ করলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম ওরফে টিটু। উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে সমাবেশ হলো। কিন্তু সেখানে যাননি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সংসদীয় আসনের দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।

এর মধ্য দিয়ে সংসদ সদস্যের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের দ্বন্দের চিত্রটি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলামের সঙ্গে তীব্র দ্বন্দ্ব রয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষ নেতাদের। সেই সঙ্গে এই আসনের দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী তারানা হালিম, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি তারেক শামস খান ও ইনসাফ আলী ওসমানী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকিরুল ইসলামের সঙ্গেও রয়েছে তীব্র দ্বন্দ্ব। তাঁরা সবাই সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলামের বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়েছেন। কয়েক বছর ধরে সংসদ সদস্যের সঙ্গে তাঁদের মুখ দেখাদেখি বন্ধ। সংসদ সদস্য তাঁর নিজের অনুসারীদের নিয়ে দলীয় কর্মসূচি পালন করেন। এদিকে অন্যরা উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে পৃথকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

সম্প্রতি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নাগরপুরে বড় একটি সমাবেশ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সমাবেশটি করার জন্য প্রস্তাব দেন। তাঁরা এই প্রস্তাবের কথা কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের জানান।

উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খালিদ হোসেন জানান, এই প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম কৃষিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে ১৭ সেপ্টেম্বর সমাবেশের তারিখ নির্ধারণ করেন। তিনি কারও সঙ্গে সমন্বয় না করে একাই সমাবেশের প্রচারণা শুরু করেন। তখন অন্য সবাই এ সমাবেশ বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, সমাবেশের মধ্য দিয়ে দ্বন্দ্ব আরও স্পষ্ট হয়ে উঠল। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুদরত আলী বলেন, সংসদ সদস্য রোববার যে সমাবেশ করলেন, তার সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।

এ প্রসঙ্গে আহসানুল ইসলামের অনুসারী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম খান জানান, সংসদ সদস্য সবাইকে নিয়ে রাজনীতি করতে চান। যাঁরা সমাবেশে আসেননি, তাঁরা কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক এবং জেলা আওয়ামী লীগকে অবজ্ঞা করেছেন।

নাগরপুর সরকারি কলেজ মাঠে বিকেলে এ সমাবেশ হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবদুল আলীমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম, সংসদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেন, সংসদ সদস্য হাসান ইমান খান সোহেল হাজারী, সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান, সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ, সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম, সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনি, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খন্দকার আশরাফুজ্জামান স্মৃতি, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জামিলুর রহমান, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মামুনুর রশিদ মামুন, দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার ফজলুল হক প্রমুখ।