সেপটিক ট্যাংক থেকে নির্মাণশ্রমিককে উদ্ধার করতে গিয়ে প্রাণ গেল ২ ভ্যানচালকের

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় সদ্য নির্মিত সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে নেমে জ্ঞান হারানো আলতাফ হোসেন নামের এক নির্মাণশ্রমিককে উদ্ধার করতে গিয়ে দুই ভ্যানচালকের মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার সকালে উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়নের নওখৈর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত ওই ভ্যানচালকেরা হলেন চিরিরবন্দর উপজেলার নওখৈর মৌলভীপাড়া গ্রামের মহির আলীর ছেলে সাইদুল আলী (৩৫) ও নওখৈর বাবুপাড়া গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে আবদুল মাবুদ (৩০)। উদ্ধার করা নির্মাণশ্রমিক আলতাফকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্মাণশ্রমিক আলতাফ নওখৈর গ্রামের শহিদুল ইসলামের বাড়িতে সেপটিক ট্যাংকে কাজ করছিলেন। তিনি সদ্য নির্মিত সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে সাটারিং খুলতে নিচে নামেন। একসময় ট্যাংকের ভেতরের বিষাক্ত গ্যাসে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। এ সময় ট্যাংকের ওপরে দাঁড়িয়ে থাকা অপর শ্রমিক ফেরদৌস হোসেন সহকর্মীর কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে চিৎকার দিলে রাস্তা থেকে দুই ভ্যানচালক আলতাফকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেন। ওই দুই ভ্যানচালক আলতাফকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ট্যাংক থেকে উদ্ধারও করেন।

কিন্তু নিজেরা উঠে আসার সময় জ্ঞান হারিয়ে নিচে পড়ে যান। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
দিনাজপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মঞ্জিল হক বলেন, সাধারণত সেপটিক ট্যাংকে কার্বন মনোক্সাইড নামের বিষাক্ত গ্যাস জমা হয়।

ঢাকনা খোলার সঙ্গে সঙ্গে কেউ ট্যাংকে নামলে বিষাক্ত গ্যাসে মুহূর্তেই তাঁর মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ট্যাংকের ঢাকনা খোলার কিছুক্ষণ পর যখন পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশ করে, তখন ট্যাংকে নামতে হবে।

চিরিরবন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুর আলম প্রথম আলোকে বলেন, সেপটিক ট্যাংকে কাজ করার সময় বিষাক্ত গ্যাসের কারণে দুজন মারা গেছেন। মৃত দুজনই পেশায় ভ্যানচালক ছিলেন। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় তাঁদের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে চিরিরবন্দর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।