গাজীপুর সিটি নির্বাচন

দলীয় কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি চাইলেন কাউন্সিলর প্রার্থী বিএনপির অন্তত ১০ নেতা

বিএনপির লোগো
বিএনপির লোগো

বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ৩০ নেতা-কর্মী অংশ নিয়েছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের কাউন্সিলর পদে। দলের নির্দেশনা উপেক্ষা করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় কেন্দ্র থেকে তাঁদের কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। ওই নোটিশের জবাবে অন্তত ১০ জন কাউন্সিলর প্রার্থী ‘অসুস্থতা’ ও ‘পারিবারিক কারণ’ দেখিয়ে দলীয় কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন বলে জানা গেছে।  

নোটিশ পাওয়া নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগর বিএনপিসহ অধিকাংশ সহযোগী সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়নি। এ কারণে তাঁদের ‘সাবেক নেতা’ পরিচয় দিয়ে চলতে হচ্ছে। এ ছাড়া কাউন্সিলর নির্বাচন করে এসব প্রার্থী এলাকায় বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রার্থী আছেন, যাঁরা গত দুবারের কাউন্সিলর। এবার তৃতীয়বারের মতো তাঁরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এ কারণে তাঁদের কাছে দলীয় পদপদবির চেয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আবার প্রার্থীদের অনেকে বলছেন, নির্বাচনের আগে কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে দল থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তাই এখন কোনো উপায় না পেয়ে প্রার্থী হওয়া নেতা-কর্মীদের অনেকেই অসুস্থতা ও পারিবারিক সমস্যা দেখিয়ে দলীয় সব ধরনের কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি চেয়ে নোটিশের জবাব দিয়েছেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার সাবেক আহ্বায়ক হান্নান মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমিসহ আরও বেশ কয়েকজন অসুস্থতা দেখিয়ে আপাতত দলীয় কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি চেয়ে জবাব দিয়েছি।’

মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক ও বর্তমান কাউন্সিলর ফয়সাল সরকার বলেন, ‘নির্বাচনের আগে দল থেকে লিখিত কোনো আদেশ বা নির্দেশ আমরা পাইনি। এ ছাড়া এর আগে গাজীপুরে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেছেন। তখন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ কারণে আমরাও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি।’

বিএনপি নেতা মুসলেম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের আগে বলেছি, আমরা নির্বাচন করছি। কাউন্সিলর পদের ব্যাপারে আগে কখনোই কোনো নির্দেশনা ছিল না। এখন নিরুপায় হয়েই দলীয় কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছি।’

মহানগর বিএনপির সদর মেট্রো থানার সভাপতি হাসান আজমল ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা জবাব দিয়েছি। তবে কী জবাব দিয়েছি, সেটা আপাতত বলতে চাইছি না।’

এর আগে গতকাল শুক্রবার সকালে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত ওই নোটিশ কাউন্সিলর প্রার্থীদের কাছে পৌঁছানো হয়। ১১ মে রুহুল কবির রিজভী নোটিশে স্বাক্ষর করেন। নোটিশে বলা হয়েছিল, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এই অবৈধ সরকারের অধীন কোনো ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অথচ আপনি দলের একজন সদস্য হয়ে ব্যক্তিস্বার্থ চিন্তা করে এই সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করেছেন। কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার কারণ দর্শিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য আপনাকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

গতকাল রাতেই প্রার্থীদের নোটিশে জবাব দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব শওকত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, যাঁদের শোকজ করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে সবাই জবাব দিয়েছেন। তবে তাঁরা কী জবাব দিয়েছেন, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।