কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠানে বাউলদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন লালন অনুসারী সাধু-ভক্ত ও বাউলেরা। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় ফকির লালন শাহের আখড়াবাড়ির প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে গত ৫ নভেম্বর রাতে দৌলতপুর উপজেলার লাউবাড়িয়া গ্রামে লালনভক্ত পলান মণ্ডলের বাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় দুর্বৃত্তদের মারধরে নারীসহ চারজন বাউল আহত হন।
জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শতাধিক সাধু, ভক্ত ও বাউল এ মানববন্ধনে অংশ নেন। এ সময় সেখানে কুষ্টিয়া লালন একাডেমির অ্যাডহক কমিটির সদস্য তাইজাল আলী খান, জাহিদ হোসেন, সম্মিলিত লালনভক্তদের পক্ষে মানববন্ধনের আয়োজক সুফি সাজেদুল ইসলাম, দৌলতপুর উপজেলা থেকে আসা ফকির ফজল সাঁই, ফকির সফি সাঁই প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনের সময় সেখানে পুলিশের ব্যাপক নিরাপত্তা ছিল।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সাধু-বাউলেরা বলেন, লালন অনুসারী সাধু ও বাউলেরা খুবই শান্ত প্রকৃতির। তাঁরা কোনো ধরনের অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত নন। এরপরও সাধু ও বাউলদের ওপর হামলা করা খুবই অন্যায় কাজ। সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ বাউল ফজল ফকির হামলার শিকার হয়েছেন। তাঁর বয়স নব্বইয়ের ঘরে। যাঁরা এই হামলার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
সাধু-বাউলদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ নভেম্বর রাত সাড়ে আটটার দিকে দৌলতপুর উপজেলার লাউবাড়িয়া গ্রামে লালনভক্ত পলান মণ্ডল নিজ বাড়িতে ঘরোয়া পরিসরে সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেখানে তাঁর গুরু বাউল শফিউল ইসলামসহ ছয় থেকে সাতজন আসেন। রাতে একই এলাকার বেশ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান।
হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে তাঁদের বেধড়ক মারধর করেন। এ সময় ওই বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। হামলার ঘটনায় নারীসহ চারজন বাউল আহত হন এবং বাউলদের সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়। এ ঘটনার দুদিন পর ৭ নভেম্বর থানায় মামলা হয়েছে। তবে এ মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। সাধু ও বাউলদের ওপর হামলার ঘটনায় হওয়া মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সম্ভাব্য সব জায়গায় পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।