লঘুচাপে মধ্যরাত থেকে টিপটিপ বৃষ্টি পড়েছে খুলনায়। সে বৃষ্টিতে শীতের সকালে ছাতা নিয়ে কাজে উদ্দেশ্যে বাইরে বের হয়েছেন মানুষ
লঘুচাপে মধ্যরাত থেকে টিপটিপ বৃষ্টি পড়েছে খুলনায়। সে বৃষ্টিতে শীতের সকালে ছাতা নিয়ে কাজে উদ্দেশ্যে বাইরে বের হয়েছেন মানুষ

খুলনায় সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি

শীতের মধ্যে খুলনায় আজ শনিবার সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টির আরও দু-এক দিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। অন্যদিকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লে রবিশস্যের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

গতকাল শুক্রবার রাত থেকেই আকাশে ঘন মেঘ জমতে শুরু করে। আর সকাল থেকেই শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। কালো মেঘে ঢেকে আছে খুলনার আকাশ। সকাল থেকেই সূর্যের দেখা নেই। এমন বিরূপ আবহাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও তুলনামূলক বেশ কম দেখা গেছে।

নগরের নিরালা তাবলিগ মসজিদের সামনে একটি চায়ের দোকানে আজ সকালে বেশ কয়েকজন রিকশাচালককে বসে চা পান করতে দেখা গেছে। কাউসার মোড়ল নামের তাঁদের একজন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাস্তায় মানুষ নেই বললিই চলে। ঠান্ডা কম থাকলিও বৃষ্টির কারণে মানুষ ঘর থ্যাকি বের হচ্ছি না। রিকশা চালাতি গিয়ে হাত কালা হয়ি যাচ্ছে, এ কারণে দোকানে দাড়াইয়ি একটু চা খায়ি গা গরম করি নিচ্ছি।’

খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। সেটি ঘনীভূত হয়ে পশ্চিম–মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। নিম্নচাপটি আজ সকালে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ–পশ্চিমে, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ–পশ্চিমে এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ–পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানা গেছে, নিম্নচাপকেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় 8০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপকেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল আছে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আগামী দু-এক দিন খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পাবে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।

খুলনায় এখন চাষাবাদ হচ্ছে বোরো ধান, আলু, শর্ষে, গমসহ বিভিন্ন রবিশস্য। খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশাজনিত আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় আলু–জাতীয় ফসলের। এ ধরনের ফসলে ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটে। বর্তমানে অতিবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যদি বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হয়, তাহলে কিছু ফসলের ক্ষতি হতে পারে।