সংবাদ সম্মেলন করে সম্পত্তি ফিরে পাওয়াসহ তাঁদের অত্যাচার থেকে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদা সুলতানা করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে
সংবাদ সম্মেলন করে সম্পত্তি ফিরে পাওয়াসহ তাঁদের অত্যাচার থেকে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদা সুলতানা করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে

কসবায় বিএনপির নেতাসহ তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. ইলিয়াছ ও তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের সম্পত্তি দখলসহ তাঁর পরিবারকে নির্যাতেনর অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সম্পত্তি ফিরে পাওয়াসহ তাঁদের অত্যাচার থেকে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদা সুলতানা করেছেন।

তবে কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইলিয়াছ ও তাঁর ভাই মো. জাহাঙ্গীর তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাঈদা সুলতানা বলেন, ‘বিএনপি নেতা ইলিয়াছ ও তাঁর ভাই জাহাঙ্গীরের ভূমি দখলসহ নানা অত্যাচারে পরিবার নিয়ে তিনি মানসিক পীড়ার মধ্যে আছেন। তাঁদের অত্যাচারের অতিষ্ঠ হয়ে বর্তমানে পরিবারসহ তিনি এলাকাছাড়া। গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ৭ আগস্ট থেকে ইলিয়াছ ও জাহাঙ্গীর তাঁদের জায়গা দখল করেছেন। কসবা পৌর শহরের খাড়পাড়ার ওই জায়গাটি তাঁর স্বামী মো. সামছুল আলম পৈতৃক ওয়ারিশ সূত্রে মালিক। ২০১৮ সালে সামছুলের মৃত্যুর পর এক মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে আমি ওই জায়গায় বসবাস করছি। গত ৭ আগস্ট জায়গা দখলের সময় ইলিয়াছ ও জাহাঙ্গীরের বাহিনী আমার ওপর চড়াও হয় এবং হত্যার হুমকি দেয়। এর পর থেকে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

সাঈদা সুলতানা আরও বলেন, ‘আমার দাদাশ্বশুর প্রকৌশলী নূরুল আলমের দুজন স্ত্রী ছিলেন। তিনি তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী রওশন আরা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে কর্মস্থল পাকিস্তানের করাচিতে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। সেখানেই রওশন আরার পাঁচ সন্তানের জন্ম হয়। মেয়ে নাছরিন আলম, ছেলে মনজুরুল আলম, মাসুদ আলম ও মহসনি আলম জন্মসূত্রেই পাকিস্তানে বসবাস করতে থাকেন। ইঞ্জিনিয়ার নূরুল আলম মৃত্যুর আগেই সব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বণ্টন করে দেন। এরই আলোকে দ্বিতীয় স্ত্রী রওশন আরাসহ তাঁর সন্তানদের পাকিস্তানে একটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরিসহ সব সম্পত্তি দিয়ে দেন। এদিকে প্রথম স্ত্রী ও তাঁর তিন সন্তান—মনিরুল ইসলাম, আনোয়ারুল ইসলাম ও মোর্শেদ আলমকে বাংলাদেশের সব সম্পত্তি বুঝিয়ে দেন। এরই সূত্র ধরে আমার শ্বশুর আনোয়ারুলের হিস্যা হিসেবে আমার স্বামী সামছুল কিছু সম্পত্তি পান। আমার শাশুড়ি ও পাঁচ মেয়ে অনুরূপভাবে সম্পত্তি পেয়েছেন। এরই সূত্র ধরে ২০১৪ সালের একটি দলিল মূলে আমি ও আমার সন্তানেরা ৩ একর ৮০ শতক জমির মালিক হই। কিন্তু পাকিস্তানের নাগরিক প্রয়াত মনজুরুল আলমের ওয়ারিশদের কাছ থেকে কিছু সম্পত্তির “পাওয়ার” নিয়ে পুরো জায়গা এবং জায়গার ভেতরে থাকা বাড়ি দখলে নেন ইলিয়াছ ও জাহাঙ্গীর।’

সাঈদা বলেন, মনজুরুল আলম বাংলাদেশি নাগরিক নন মর্মে আদালত সন্দেহ পোষণ করেন। তাঁর নাগরিকত্ব প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত আদালত মামলাটি স্থগিত রেখেছেন। তবে সম্প্রতি জায়গা নিয়ে আদালতে অভিযোগ দেওয়ার পর স্থিতাবস্থার আদেশ স্থগিত করেন আদালত।

সাঈদা সুলতানা বলেন, ওই সময়ে পৌর মেয়রের দায়িত্বে থাকাকালীন ইলিয়াছ ২০০৩ সালের ২৫ নভেম্বর এক প্রত্যায়নপত্রে নিশ্চিত করেন যে মনজুরুলসহ তাঁদের পরিবার বাংলাদেশে থাকেন না। পরে অবশ্য মনজুরুল আলম বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিও করেন।

সংবাদ সম্মলেন উপস্থিত মো. হারুন মিয়া নামে কসবার এক ব্যক্তি জানান, সাঈদা সুলতানার কাছ থেকে তিনি কিছু জায়গা কিনেছিলেন। ইলিয়াছ ও তাঁর ভাই নিজেদের জায়গার মালিক দাবি করে ওই জায়গা দখল করে নিয়েছেন।

তবে ইলিয়াছের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সাঈদা সুলতানার পাঁচ ননদ, শাশুড়ির কাছ থেকে ১৫ বছর আগে জায়গা কিনেছেন ও জায়গাটি ভোগদখল করছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমি যাঁদের কাছ থেকে জায়গা নিয়েছি, তাঁদের বাড়ি আছে কুমিল্লায়। বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। সাঈদা সুলতানার সব অভিযোগ মিথ্যা। তিনি এ নিয়ে মামলা করলেও আদালতের রায় আমার পক্ষে রয়েছে।’