গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই বোন ও তাদের ভাবিকে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর কাজী বাড়িতে
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই বোন ও তাদের ভাবিকে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর কাজী বাড়িতে

পাশাপাশি তিন কবরে দুই বোন ও ভাবি

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তিন বোন ও ভাবির দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুরে গ্রামের বাড়িতে দুই বোন নাছিমা বেগম ও আসমা বেগম এবং তাঁদের ভাবি মনোয়ারা বেগম ওরফে কোমলের দাফন হয়েছে পাশাপাশি তিন কবরে। নিহত আরেক বোন সালমা বেগমের দাফন হয়েছে তাঁর স্বামীর বাড়ি গোপালগঞ্জে।

গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দুই বোন ও তাঁদের ভাবির দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নাছিমা, আসমা ও কোমল বেগমের লাশ একটি পিকআপ ভ্যানে করে ভাঙ্গা থেকে গ্রামের বাড়ি গোপালপুরে আনা হয়। একই সময় আরেক বোন সালমা বেগমের লাশ তাঁর স্বামীর বাড়ি গোপালগঞ্জ পৌর এলাকায় পৌঁছায়।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সকালে একটি ভাড়া করা মাইক্রোবাসে হুমায়ুন কবির তাঁর স্ত্রী মনোয়ারা, ছোট ভাই-বোন মিলিয়ে মোট সাতজন ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের ডাসারের উদ্দেশে রওনা দেন। তাঁরা সবাই দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার মোহাম্মদপুর ও মিরপুর এলাকায় থাকেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ছাগলছিড়া এলাকায় মাইক্রোবাসের সঙ্গে গ্লোবাল পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসের চার নারী যাত্রী ও চালক নিহত হন। এ ঘটনায় আহত তিনজনকে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত তিন বোনের ভাতিজা কাজী সুলতানুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ফুফুদের মধ্যে খুব মিল ছিল। তাঁরা সব কাজ একসঙ্গে করতেন। সবাই ঢাকাকেন্দ্রিক হলেও দেশের বাড়িতে একসঙ্গে বেড়াতে আসতেন। পাঁচ ফুফুর মধ্যে তিন ফুফু একসঙ্গে মারা যাবেন, ভাবতে কষ্ট হচ্ছে। আমাদের ইচ্ছা ছিল, তিন ফুফুর দাফন একই স্থানে করার। কিন্তু আমার দুই ফুফু ও চাচিকে গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন করা হলেও নিহত আরেক ফুফুকে তাঁর স্বামীর বাড়িতে নেওয়া হয়েছে।’

নিহত মনোয়ারা বেগমের দুই মেয়ে কাজী পলি ও কাজী জুলি মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে গোপালপুরে এসেছেন। তাঁরা দুজন বলেন, ‘মায়ের সঙ্গে শেষ কথা হলো। মা জানালেন, দাদাবাড়ি দুই দিন থেকে আবার ঢাকায় ফিরে আসবেন। কিন্তু কী থেকে কী হয়ে গেল! মা আমাদের রেখে চলে গেলেন। মায়ের মৃত্যু আমরা কেউ মানতে পারছি না। ভাবতে গেলে খুব কষ্ট হচ্ছে।’

ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক আবু নোমান বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও মাইক্রোবাসটি হাইওয়ে পুলিশ জব্দ করে থানা হেফাজতে রেখেছে। এ দুর্ঘটনায় বাসের চালককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।