গাজীপুরের ৯টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় তুসুকা গ্রুপের পাঁচটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে
ছবি: মাসুদ রানা

অব্যাহত শ্রমিক অসন্তোষ, বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার ৯টি পোশাক তৈরির কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আজ শুক্রবার সকালে কারখানাগুলোর সামনে বন্ধের নোটিশ সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ২২ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলো বলে শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মজুরি বোর্ডে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর ঘোষণার দ্বিতীয় দিন গতকাল বৃহস্পতিবার গাজীপুরে তিনটি এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। শ্রমিকদের হামলা-ভাঙচুরে দিনভর উত্তপ্ত ছিল এসব এলাকা। এ সময়ে শ্রমিকেরা তুসুকা নামের একটি পোশাক তৈরির কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন। কারখানার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা পুলিশের তিনটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ১৫ শ্রমিক। ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগ ২৭ জনকে আটক করা হয়। তবে আজ শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত কোথাও বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়নি।

আজ সকালে কোনাবাড়ী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গতকালের হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তুসুকা কারখানা। সেই কারখানার সামনে সাঁটানো হয়েছে একটি বন্ধের নোটিশ। নোটিশে তুসুকা গ্রুপের পাঁচটি কারখানা তুসুকা জিনস, তুসুকা ট্রাউজার্স, তুসুকা প্রসেসিং, তুসুকা প্যাকেজিং ও নিডেল আর্ট এমব্রয়ডারি পরবর্তী কাজের নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং কারখানার সম্পদ রক্ষার স্বার্থ শ্রম আইনের ২০০৬-এর ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

কারখানাটির মহাব্যবস্থাপক মাসুম হোসেন বলেন, পরবর্তীকালে কারখানা খোলার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে নোটিশের মাধ্যমে তারিখ শ্রমিকদের জানিয়ে দেওয়া হবে।

এ ছাড়া কোনাবাড়ী আমবাগ রোডের এমএম নিটওয়্যার লিমিটেড ও কোনাবাড়ী জরুন এলাকার ইসলাম গ্রুপের কারখানার এক নারী শ্রমিক আহত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় ওই গ্রুপের তিনটি কারখানার সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশ জোন-২-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহম্মেদ জানান, এ পর্যন্ত গাজীপুরের কোনাবাড়ী ও আশপাশের এলাকার ২২টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করার খবর তাঁদের কাছে রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ অক্টোবর থেকে গাজীপুরে শ্রমিকেরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে মজুরি বোর্ডে বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা ঘোষণা করা হলে সেটি প্রত্যাখ্যান করে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।